ইউক্রেন থেকে পোল্যান্ড হয়ে দেশে ফিরছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ সময় মোদিকে বহনকারী উড়োজাহাজটি পাকিস্তান হয়ে ভারতে ফেরে। ফেরার পথে পাকিস্তানের আকাশসীমায় ৪৬ মিনিট ধরে উড়ে চলে মোদির উড়োজাহাজ।
সংবাদমাধ্যমের তথ্য, যখন কোনো রাষ্ট্র কিংবা সরকারপ্রধান পাকিস্তানের আকাশসীমা অতিক্রম করেন, তখন রীতি বা ঐতিহ্য মেনে তিনি একটি শুভেচ্ছাবার্তা (গুডউইল মেসেজ) দেন। কিন্তু মোদি সেটা করেননি।
আঞ্চলিক রাজনীতিতে প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তান চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ। তাই পাকিস্তানের আকাশসীমায় ভারতের প্রধানমন্ত্রীর অবস্থান এবং শুভেচ্ছাবার্তা না দেওয়ার ঘটনা পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমের মনোযোগ কেড়েছে।
এ বিষয়ে পাকিস্তানের এভিয়েশন শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত একটি সূত্র সংবাদমাধ্যম ডনকে জানায়, শুভেচ্ছাবার্তা দেওয়া পুরোনো একটি রীতি। এটা বাধ্যতামূলক নয়। অর্থাৎ কেউ রীতি মেনে বার্তা দিতে পারেন, না-ও দিতে পারেন। কিন্তু মোদি ভারতে তার সমালোচকদের কাছ থেকে এ নিয়ে সমস্যায় পড়তে পারেন।
পাকিস্তানের উড়োজাহাজ চলাচল কর্তৃপক্ষের সূত্রের বরাতে একাধিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, নরেন্দ্র মোদিকে বহন করা ভারতীয় উড়োজাহাজ পাকিস্তানের চিত্রল অঞ্চলের আকাশসীমায় প্রবেশ করে। পরে অমৃতসরে চলে যায়। এর মাঝে উড়োজাহাজটি ইসলামাবাদ ও লাহোরের ওপর দিয়েও উড়ে যায়।
সূত্রটি আরও জানায়, ভারতের বাণিজ্যিক উড়োজাহাজের জন্য এখন পাকিস্তানের আকাশসীমা উন্মুক্ত আছে।
সূত্রটি বলেছে, প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী উড়োজাহাজের আকাশসীমা ব্যবহারে আলাদা করে কোনো অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন হয় না। কিছু ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর উড়োজাহাজকে একটি কল সাইন দেওয়া হয়। একইভাবে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ রাষ্ট্রপ্রধানদের বহনকারী উড়োজাহাজকে নিজেদের আকাশসীমা অতিক্রমের সময় ‘পাকিস্তান ওয়ান’ কল সাইন দেওয়া হয়।
ভারতীয় যুদ্ধবিমানের আন্তর্জাতিক সীমা ও পাকিস্তানের আকাশসীমা লঙ্ঘনের ঘটনার পর ২০১৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি নিজেদের আকাশসীমা পুরোপুরি বন্ধ করে দেয় পাকিস্তান। পরবর্তী সময় মার্চে আকাশসীমা আংশিক খুলে দেওয়া হয়। তবে ভারতীয় উড়োজাহাজের জন্য সেটা নিষিদ্ধ ছিল।
একই বছর জার্মানি যাওয়ার সময় মোদিকে বহনকারী একটি উড়োজাহাজ পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার করতে চাইলে অনুমতি দেয়নি ইসলামাবাদ। কাশ্মীর নিয়ে তখন ভারত-পাকিস্তানের চরম উত্তেজনা চলছিল। যদিও দুই বছর পর মোদি যখন যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন, তখন তাঁকে বহনকারী উড়োজাহাজটিকে নিজেদের আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল পাকিস্তান।