ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে কলকাতার অভিজাত হোটেলে নিয়ে হত্যার আগে অপরাধের প্রমাণ লোপাটের যাবতীয় পরিকল্পনা করা হয়। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এমপি আনারকে হত্যার পর তার শরীর যন্ত্র দিয়ে কিমা করা হয়।
এমনটাই দাবি করেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি। কর্মকর্তারা বলছেন, যে যন্ত্রটি দিয়ে মাংস কিমা করা হয়েছিল তা কিনেছিলেন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে নেপাল থেকে গ্রেপ্তার সিয়াম। ২২০০ টাকায় কিমা করা যন্ত্রটি কিনেছিলেন কলকাতা নিউ মার্কেট থেকে।
বুধবার (১৯ জুন) ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘গ্রেপ্তার সিয়াম কলকাতার নিউ মার্কেটের একটি দোকান থেকে ২২০০ টাকা দিয়ে ওই যন্ত্র কিনেছিল। প্রমাণ লোপাটের জন্যই ওই কিমা করার যন্ত্র ব্যবহার করা হয়।
তবে প্রতিবেদনে সিআইডির একাংশের দাবি তুলে ধরে বলা হয়েছে, ওই যন্ত্রে পুরো মাংস কিমা করা যায়নি। তাই তারা লাশটিকে ছোট ছোট টুকরো করে সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেয়।
এর আগে হত্যার ঘটনাস্থল কলকাতার সঞ্জীবা গার্ডেনে সেপটিক ট্যাংক থেকে প্রায় পাঁচ কেজি মাংস উদ্ধার করে পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি। পরে এই মাংস মানুষের কি না তা নিশ্চিত হতে ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য পাঠানো হয়। পরে নিশ্চিত হয় যে তা মানুষের। তবে এমপি আজিমের কিনা তা ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
তবে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য এমপি আজীমের মেয়ে ডরিনের ভারত সফর এখনও অনিশ্চিত বলে জানিয়েছে নিহতের পরিবার সংশ্লিষ্টরা। নিহত এমপির ব্যক্তিগত সহকারী আব্দুর রউফ বলেন, ঈদের আগে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তদন্ত কর্মকর্তা ডরিনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ঈদের পর ভারতে যেতে হবে বলে জানান। তবে পরবর্তীতে আর যোগাযোগ হয়নি।
উল্লেখ্য, গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে ভারতে যান এমপি আনার। ওঠেন পশ্চিমবঙ্গে বরাহনগর থানার মণ্ডলপাড়া লেনে গোপাল বিশ্বাস নামে এক বন্ধুর বাড়িতে। পরদিন চিকিৎসক দেখানোর কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকেই রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ ছিলেন।
নিখোঁজের পাঁচদিন পর ১৮ মে বরাহনগর থানায় আনোয়ারুল আজীম নিখোঁজের বিষয়ে জিডি করেন বন্ধু গোপাল বিশ্বাস। ২২ মে হঠাৎ খবর ছড়ায়, কলকাতার পার্শ্ববর্তী নিউটাউন এলাকায় সঞ্জীবা গার্ডেনসের আবাসিক ভবনে আনার খুন হয়েছেন। ঘরের ভেতর পাওয়া যায় রক্তের ছাপ।