রাশিয়ার ৪৫ জন কূটনীতিক ও দূতাবাস কর্মীকে অবন্ধুসুলভ নানা কর্মকাণ্ডের কারণে বহিষ্কার করছে মলদোভা। বুধবার দেশটির কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এতে করে মলদোভায় রুশ কূটনীতিকদের সংখ্যা দাঁড়াবে মাত্র ২৫ জনে। দেশটির এমন সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে রাশিয়া।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসনের পর থেকে মলদোভান সরকার মস্কোর বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তি এবং বিরোধী দলকে সমর্থন করার অভিযোগ এনেছে।
মূলত মলদোভার রুশ দূতাবাসের ছাদ এবং রাশিয়ার ব্যবহৃত পার্শ্ববর্তী একটি ভবনের ছাদে স্থাপন করা নতুন নজরদারি সরঞ্জাম নিয়ে সংবাদমাধ্যম খবর প্রকাশের পর গত মঙ্গলবার মলদোভার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। সাড়া জাগানো ওই প্রতিবেদনটি রাশিয়ার অনুসন্ধানী মিডিয়া সাইট ইনসাইডার এবং মলদোভার জার্নাল টিভি চ্যানেলে প্রকাশিত হয়।
মলদোভার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ‘চলমান উত্তেজনা এবং অবন্ধুসুলভ কর্মকাণ্ডের’ কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং (বহিষ্কৃত) রাশিয়ানদের আগামী ১৫ আগস্টের মধ্যে চলে যেতে হবে।
মলদোভার পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকু পোপেস্কু বলেছেন, “অনেক বছর ধরে আমরা রাশিয়ার শত্রুতামূলক কর্মকাণ্ড ও নীতির লক্ষ্যবস্তু হয়েছি। আর এসব কর্মকাণ্ডের অনেকগুলোই দূতাবাসের মাধ্যমে করা হয়েছে।”
এর প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, মলদোভার ‘অবন্ধুসুলভ পদক্ষেপটিকে কোনো জবাব ছাড়া ছেড়ে দেওয়া হবে না। এর অর্থ মলদোভার কনস্যুলার পরিষেবা এবং রাশিয়ার সঙ্গে মোলদোভানদের যোগাযোগের ওপর বিধিনিষেধ আরোপের মতো পদক্ষেপ থাকতে পারে। যদিও নির্দিষ্ট কোনো ব্যবস্থার কথা ঘোষণা করেননি তিনি।
এদিকে দেশটির এমন সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে রাশিয়া। পাশাপাশি ৪৫ জন কূটনীতিক ও দূতাবাস কর্মীকে পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে তারা।
মাত্র ২৬ লাখ জনসংখ্যার দেশ মলদোভা ইউরোপের সবচেয়ে দরিদ্রতম অর্থনীতির দেশগুলোর একটি এবং প্রতিবেশী ইউক্রেনের যুদ্ধে এই দেশটি ব্যাপকভাবে সামনে চলে এসেছে। দেশটি বড় ধরনের জ্বালানি সংকটের সম্মুখীন হয়েছে। কারণ দেশটির বিদ্যুৎ অবকাঠামো সোভিয়েত যুগের। রাশিয়া কেবল মলদোভায় গ্যাস সরবরাহই সীমিত করেনি বরং ইউক্রেনের বিদ্যুৎ গ্রিডে রুশ সামরিক বাহিনীর হামলার কারণেও মলদোভায় বিদ্যুৎ সংকট দেখা দিয়েছে।
অন্যদিকে ১৯৯২ সালে রোমানিয়া এবং ইউক্রেনের মাঝে অবস্থিত ছোট্ট রাষ্ট্র মলদোভার একটি অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। রাশিয়া ঘনিষ্ঠ এই অংশের নাম ট্রান্সনিস্ট্রিয়া। বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর ওই অঞ্চলে রাশিয়া তাদের সেনা মোতায়েন করে রেখেছে।