• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
জরিপের ফলাফল

অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নিজেদের নিরাপদ মনে করছেন সংখ্যালঘুরা


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৯, ২০২৪, ০৩:৫২ পিএম
অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নিজেদের নিরাপদ মনে করছেন সংখ্যালঘুরা
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। ছবি: সংগৃহীত

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের তুলনায় অন্তবর্তী সরকার ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের বেশি নিরাপত্তা দিচ্ছে। যে কারণে বাংলাদেশের জনসংখ্যার উল্লেখযোগ্য এই অংশ বর্তমান সরকারের অধীনে নিজেদের নিরাপদ মনে করেন। গত অক্টোবরের শেষের দিকে ভয়েস অব আমেরিকা পরিচালিত এক জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছি।

এক হাজার উত্তরদাতার উত্তরের ওপর ভিত্তি করে জরিপটি চালানো হয়। জরিপে সমান সংখ্যক পুরুষ ও নারীর অংশগ্রহণ ছিল। উত্তরদাতাদের ৯২ দশমিক ৭ শতাংশ মুসলিম ছিল। তাদের অর্ধেকেরও বেশি ৩৪ বছরের কম বয়সি। প্রায় এক চতুর্থাংশ শহরাঞ্চলে বাস করেন।

জরিপে দেখা গেছে, দেশের ৬৪ দশমিক ১ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, অন্তবর্তী সরকার আগের সরকারের তুলনায় সংখ্যালঘুদের বেশি সুরক্ষা দিচ্ছে। অন্যদিকে ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ মনে করেন পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। আর ১৭ দশমিক ৯ শতাংশ মনে করেন পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। জরিপের ফলাফল বলা হয়েছে, মুসলিম ও অমুসলিমদের মধ্যে নিরাপত্তার ধারণা ভিন্ন ভিন্ন।

দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য: জরিপে মুসলিম ও সংখ্যালঘুদের মধ্যে নিরাপত্তার ধারণায় বিভাজন প্রকাশ পেয়েছে। মুসলিম উত্তরদাতাদের মধ্যে মাত্র ১৩ দশমিক ৯ শতাংশ মনে করেন এই সরকারের অধীনে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। তবে ৩৩ দশমিক ৯ শতাংশ সংখ্যালঘু উত্তরদাতা মনে করেন, তাদের নিরাপত্তা কমে গেছে।

মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে ঢাকার বাসিন্দা ও এনজিওকর্মী জয়তী সরকার জানান, আগে গভীর রাতে বাড়ি ফিরতে নিরাপদ বোধ করলেও এখন সন্ধ্যায়ও বাইরে বেরোতে ভয় পান। তিনি বলেন, ‘আগে রাত ১১টায় মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরতে দ্বিধা করতাম না। এখন রাত ৮টাতেও আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’

তবে এমন উদ্বেগ সত্ত্বেও, কিছু উত্তরদাতা নির্দিষ্ট রাজনৈতিক উৎপাতের অনুপস্থিতির কারণে স্বস্তির অনুভূতির কথা স্বীকার করেন। জয়তী বলেন, ‘১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কম দামে হিন্দু মালিকানাধীন জমি দখল করেছে অথবা বিক্রি করতে বাধ্য করেছে। এখন তারা চলে গেছে, সেই দিক থেকে স্বস্তি এসেছে।’

ঢাকার বাসিন্দা ও একটি প্রতিষ্ঠানের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর হীরেন পণ্ডিত মনে করেন, সেনা মোতায়েন বৃদ্ধির কারণে গ্রামীণ এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত হয়েছে। তবে তিনি ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কিতও। তিনি বলেন, ‘আমাদের গ্রামের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল এবং আমরা এখনও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে বসবাস করছি।’

এর আগে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয়ে ধারাবাহিকভাবে হামলা ও সহিংসতা চালানো হয়।

পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর অগ্নিসংযোগের ঘটনার কথা উল্লেখ করে মানবাধিকার কর্মী নূর খান লিটন মনে করেন, রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা এবং সংখ্যালঘু হওয়ার কারণে এসব হামলা চালানো হয়েছে। সূত্র: ইউএনবি।

Link copied!