বাংলাদেশের পাসপোর্টে ‘এক্সসেপ্ট ইসরায়েল’ শর্ত পুনর্বহালের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে নিউজ প্রকাশ করেছে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম। তাতে বলা হয়, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশ ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়নি। দেশটিতে ইসরায়েল একটি আলোড়ন সৃষ্টিকারী বিষয়।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এক লাখ লোকের বিক্ষোভের একদিন পর এই ঘোষণা এলো। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটি শেখ হাসিনা সরকারের আমলে লেখাটি সরিয়ে ফেলেছিল কিন্তু ইসরায়েলকে তাদের স্বীকৃতি না দেওয়ার নীতি বজায় রাখে।
আরও বলা হয়, পাসপোর্টে ‘এক্সসেপ্ট ইসরায়েল’ শর্ত পুনর্বহালের মাধ্যমে কার্যকরভাবে বাংলাদেশ নাগরিকদের ইসরায়েল ভ্রমণে বাধা দিচ্ছে।
বাংলাদেশের পাসপোর্টে আগে লেখা থাকত- ‘দিস পাসপোর্ট ইজ ভ্যালিড ফর অল কান্ট্রিজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড এক্সেপ্ট ইসরায়েল।’ অর্থাৎ এই পাসপোর্ট ইসরায়েল ব্যতীত পৃথিবীর সব দেশের জন্য বৈধ বা এই পাসপোর্ট নিয়ে ইসরায়েল ছাড়া পৃথিবীর যেকোনো দেশে যাওয়া যাবে।
কিন্তু ২০২০ সালে দেশে নতুন ই-পাসপোর্টে এই বাক্যটি পরিবর্তন করে লেখা হয় : ‘দিস পাসপোর্ট ইজ ভ্যালিড ফর অল কান্ট্রিস অব দ্য ওয়ার্ল্ড।’ অর্থাৎ ‘এক্সেপ্ট ইসরায়েল’ শব্দ দুটি বাদ দেওয়া হয়।
২০২০ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার দেশে নতুন ই-পাসপোর্ট চালু করলে সেই পাসপোর্টগুলো থেকে এই লেখা বাদ দেয়। এমনকি এ বিষয়ে কোনো ঘোষণাও দেওয়া হয়নি।
গত ৭ এপ্রিল তারিখে উপসচিব নীলিমা আফরোজের সই করা একটি প্রজ্ঞাপনে আগের লেখা ফিরিয়ে আনার তথ্য জানা যায়। রোববার (১৩ মার্চ) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন নীলিমা আফরোজ।
উপসচিব নীলিমা আফরোজের সই করা ওই আদেশে বলা হয়েছে, উপর্যুক্ত বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ প্রক্রিয়া অবলম্বন করে পূর্বের ন্যায় বাংলাদেশি পাসপোর্টে ‘ইসরায়েল ব্যতীত’ শর্ত পুনর্বহালের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
শনিবার (১২ এপ্রিল) রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ফিলিস্তিনিদের জন্য ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এতে অংশ নিয়েছেন ফিলিস্তিনপ্রেমী লাখো জনতা। বাংলাদেশের এ কর্মসূচি নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছিল ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল।
‘গাজা যুদ্ধের প্রতিবাদে ঢাকায় লাখো মানুষের বিক্ষোভ, নেতানিয়াহু ও মিত্রদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন’ শীর্ষক শিরোনামে এ খবর প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় প্রায় এক লাখ মানুষের বিশাল বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জড়ো হয়ে ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন’সহ নানা স্লোগানে গর্জে ওঠেন।
ফিলিস্তিনের শত শত পতাকা হাতে বিক্ষোভকারীরা ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতের নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। তাদের ইসরায়েলি বর্বরতায় মদদদাতা হিসেবে অভিযুক্ত করেছেন বিক্ষোভকারীরা।