জাপানের রাজধানী টোকিওসহ বিভিন্ন শহরে ‘হোস্ট ক্লাব’ নামে বিশেষ এক ধরনের ক্লাব কালচার গড়ে উঠেছে। এসব ক্লাবে পুরুষদের সঙ্গ পাওয়ার জন্য ছুটে যান নারীরা। যাদের মধ্যে রয়েছেন কম বয়সীরাও। আর সেজন্য বড় অংকের টাকাও খরচ করতে হয়।
হোস্ট ক্লাব অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি ইউইচি হোজোর মতে, শুধুমাত্র টোকিওর কাবুকিচো এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ২৪০-২৬০টি হোস্ট ক্লাব। প্রতিদিন এসব ক্লাবে ভিড় জমে নারীদের। আগে থেকেই এসব ক্লাবে নির্ধারিত পুরুষকর্মীরা অপেক্ষায় থাকেন নারী ক্লায়েন্টদের জন্য। এসব ক্লাবে প্রতিবার যেতে এক একজন নারীকে খরচ করতে হয় ২০ হাজার ইয়েন।
স্থানীয় গণমাধ্যমের তথ্য বলছে, এসব হোস্ট ক্লাবের টাকা মেটানোর জন্য তরুণীরা যৌন পেশাকে বেছে নিয়েছেন। অল্প বয়সী তরুণীরা পুরুষদের যৌনতা উপভোগ করতে দিয়ে যে টাকা আয় করেন, সেই টাকাই আবার হোস্ট ক্লাবে গিয়ে পুরুষদের সঙ্গ নিতে ব্যয় করেন। ফলে জাপান তথা টোকিওতে ‘সেক্স ট্যুরিজম’ দিন দিন ফুলে ফেঁপে উঠছে।
টোকিওর যৌনপেশাজীবীদের অন্যতম বিচরণ এলাকা ওকুবো পার্কের আশপাশ থেকে গেল বছরে (২০২৩) যৌনবৃত্তির অভিযোগে ১৪০ জন তরুণীকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। যাদের মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশের বয়স ২০ বছর। আর মাত্র তিনজনের বয়স ছিল ১৯ বা তারও কম।
জাপানের মেট্রোপলিটন পুলিশ ডিপার্টমেন্টের তথ্য অনুযায়ী, গ্রেপ্তার তরুণীদের মধ্যে ৪৩ শতাংশ দাবি করেছে, দারিদ্রের কারণে এবং হোস্ট ক্লাবের টাকা মেটানোর জন্য তারা যৌনপেশা বেছে নিয়েছেন। এসব তরুণী বা নারীদের ক্লায়েন্ট হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পুরুষরা রয়েছেন। যে তালিকার শীর্ষে রয়েছেন চীনা পুরুষরা।
তবে জাপানে যে হারে সেক্স ট্যুরিজম বাড়ছে যৌনকর্মীদের ওপর নির্যাতন করার অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছে তেমনই। শুধু যৌনরোগ ছড়ানো নয়, তাদের ওপর শারীরিক হিংসা এবং টাকা কেড়ে নেওয়ারও প্রচুর অভিযোগও উঠেছে।
যদিও জাপানে অর্থের বিনিময়ে যৌনতা কেনাবেচা অবৈধ। তবে নিষেধাজ্ঞা শুধুমাত্র সঙ্গমের জন্য সীমাবদ্ধ। অবাধে যৌনতা কেনাবেচায় লাগাম টানতে জাপানে ‘অ্যান্টি-প্রস্টিটিউশন ল’ রয়েছে।
ওই আইনে কাউকে গ্রেপ্তার করলে ছয় মাসের জন্য জেল হয়। একই সঙ্গে ১০ হাজার ইয়েন জরিমানাও হতে পারে। তবে শাস্তি শুধু হতে পারে যৌনকর্মীদের। আর যিনি যৌন পরিষেবা নিতে আসেন তার ওপর এই আইন বলবৎ হয় না।