সুদানে অব্যহত রয়েছে সেনাবাহিনী ও আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে সংঘর্ষ। দেশটিতে প্রায় দুই মাস ধরে চলমান এ সংঘর্ষে ‘গণহত্যার’ জন্য জনসমক্ষে আরএসএফকে দায়ী করেছিলেন পশ্চিম দারফুরের গভর্নর খামিস আবাকার। এ ঘটনার পরপরই বুধবার অপহরণ করে হত্যা করা হয় তাকে।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। এতে বলা হয়, তার মৃত্যুর বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি তবে রয়টার্স দুটি সরকারি সূত্রের বরাতে জানিয়েছে, আরএসএফ এ হত্যার জন্য দায়ী।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সুদানের সেনাবাহিনীও গভর্নরকে ‘অপহরণ ও হত্যা’ জন্য আরএসএফকে দায়ী করেছে। তারা বলেছে, এই হত্যাকাণ্ডটি আরএসএফ বর্বর অপরাধের রেকর্ডে একটি ‘নতুন অধ্যায়’ যোগ করেছে। সেনাবাহিনী ফেসবুকে এ ঘটনাকে ‘নৃশংস কাজ’ বলেও অভিহিত করেছে।
অবশ্য আরএসএফ তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
সুদানের দারফুর অঞ্চলের গভর্নর মিনি আর্কো মিনাউই জানিয়েছেন, একটি টেলিভিশন চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই খামিস আবাকারকে হত্যা করা হয়। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘অসংখ্য বেসামরিক জনগণ মারা যাচ্ছে।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত কিছু ভিডিওতে দেখা গেছে, আরএসএফ ইউনিফর্ম পরিহিত একদল লোক উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তাকে।
জাতিসংঘ বুধবার বলেছে, সুদানের সংঘাতে ২ মিলিয়নের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। দারফুরে ক্রমবর্ধমান হামলা ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ হতে পারে।
স্থানীয় কর্মী ও জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের মতে, পশ্চিম দারফুরের প্রাদেশিক রাজধানী এল-জেনিনাতে, আরএসএফ এবং সহযোগী যোদ্ধারা গত সপ্তাহে শহরের মধ্য দিয়ে তাণ্ডব চালিয়ে শত শত লোককে হত্যা ও আহত করেছে।
অ্যাক্টিভিস্ট এবং এল-জেনিনার বাসিন্দারা আরও জানিয়েছেন, কয়েক ডজন নারী তাদের বাড়ির ভেতরে এবং পালানোর সময় যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। প্রায় সবগুলো ধর্ষণে আরএসএফকে দোষারোপ করা হয়েছে।
প্রায় দুই মাস ধরে সুদানের পশ্চিম অংশ সংঘর্ষে উত্তাল। সেনাবাহিনী ও আরএসএফের এই সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন দুই হাজার বেসামরিক নাগরিক। সঙ্গে দেখা দিয়েছে মানবিক বিপর্যয়। দেশটির খার্তুম, কর্দোফান ও দারফুর অঞ্চলের অবস্থা সবচেয়ে শোচনীয়।