নির্বাচন নিয়ে ইলন মাস্কের মিথ্যা পোস্টে ভিউ ২০০ কোটি


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ৬, ২০২৪, ১২:৪১ এএম
নির্বাচন নিয়ে ইলন মাস্কের মিথ্যা পোস্টে ভিউ ২০০ কোটি

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়েছেন ধনকুবে প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক। তার করা পোস্টগুলো অন্তত ২ বিলিয়ন, অর্থাৎ ২০০ কোটি ভিউ হয়েছে।

‘সেন্টার ফর কাউন্টারিং ডিজিটাল হেট’ নামের অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনে এমন চিত্র উঠে এসেছে।

খবর রয়টার্সের।

বিশেষজ্ঞরা স্থানীয় সময় সোমবার (৪ নভেম্বর) বলেন, এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ দোদুল্যমান রাজ্যগুলোয় ভুয়া তথ্য ছড়াতে মূল ভূমিকা পালন করেছে। এসব দোদুল্যমান রাজ্যই শেষ পর্যন্ত ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস আর রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়-পরাজয় ঠিক করে দেবে।

এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি কর্মকর্তা ও ভোটাধিকার নিয়ে কাজ করা কর্মীরা আগেই ভুল তথ্য প্রকাশের ব্যাপারে সতর্ক করেন। সেই সঙ্গে এক্সসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর কর্তৃপক্ষকে নির্বাচন নিয়ে যেকোনো ধরনের ভুল তথ্য সরিয়ে ফেলতে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান।

এরপরও অনেক ভুয়া তথ্য ছড়িয়েছে বলে অভিযোগ। এমনকি অভিযোগ উঠল খোদ এক্স-এর মালিক ইলন মাস্কের বিরুদ্ধেও। নির্বাচনের মাত্র একদিন আগে সোমবার (৪ নভেম্বর) একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে ‘সেন্টার ফর কাউন্টারিং ডিজিটাল হেট’। 

ইলন মাস্ক প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়েছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে নিজ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়েছেন ইলন মাস্ক। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, চলতি বছর মাস্কের অন্তত ৮৭টি পোস্ট মিথ্যা বা বিভ্রান্তিমূলক হিসেবে চিহ্নিত করেছেন ফ্যাক্ট চেকাররা।

প্রতিবেদনে মাস্কের যেসব পোস্টকে মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর বলে চিহ্নিত করা হয়েছে, সেগুলো মূলত ‘ভোটার আমদানি’ করা। যেমন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ রাজ্যগুলোয় গত চার বছরে অনিবন্ধিত অভিবাসীর সংখ্যা ‘তিন অঙ্কের’ কোটায় বেড়ে যাওয়া, ‘ভোটপ্রক্রিয়ার সুসংহত’ অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তোলা প্রভৃতি বিষয় সংশ্লিষ্ট। 

এর আগে গত সপ্তাহে একই প্রতিষ্ঠান বলেছে, নির্বাচন নিয়ে মিথ্যা দাবি চ্যালেঞ্জ জানাতে এক্সের যে ফ্যাক্ট চেকিং বৈশিষ্ট্য রয়েছে, সেটি কাজ করছে না।

অধ্যাপক ক্যাথলিন কার্লি বলেছেন, এক্স-প্ল্যাটফর্মে মাস্কের প্রায় ২০ কোটির ওপর অনুসারী আছেন। ফলে তার যেকোনো পোস্ট ‘নেটওয়ার্ক ইফেক্টের’ কারণে রেডিট বা টেলিগ্রামের মতো অন্যান্য প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীদের কাছেও পৌঁছে যায়। অর্থাৎ ভিন্ন ভিন্ন প্ল্যাটফর্মের মধ্যে সংযোগ মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে এক্স।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে অনলাইনে মিথ্যা তথ্য শনাক্তকারী প্রতিষ্ঠান সিয়াব্রা জানিয়েছে, ১ লাখ ১৭ হাজার অনুসারী আছে এমন একটি এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে ভুয়া একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। ওই ভিডিওতে দেখানো হয়, পেনসিলভিনিয়াতে ট্রাম্পের পক্ষের মেইল-ইন ব্যালট ধ্বংস করা হচ্ছে।

নির্বাচনি অধিকার নিয়ে কাজ করা নির্দলীয় প্রতিষ্ঠান ‘কমন কজ’-এর নির্বাহী পরিচালক ফিলিপ হেন্সলি রবিন বলেছেন, অনেক এক্স ব্যবহারকারী ভোট জালিয়াতির গুজব ছড়াচ্ছেন। কিন্তু দেশজুড়ে নির্বাচনি কর্তৃপক্ষ ও কর্মকর্তারা আইন মেনে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন, যেন কেবল বৈধ ভোটাররাই অংশ নিতে পারেন।

ট্রাম্পের পক্ষে ভোট টানতে বিপুল পরিমাণ অর্থও ব্যয় করেছেন মাস্ক। বিষয়টি শেষ পর্যন্ত আদালতে গড়িয়েছে। 

 

Link copied!