শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার নিয়ে দুই দেশের মধ্যে টানাপোড়েন নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এরই মধ্যে ভারত সরকার ও দেশটির বিরোধী দল কংগ্রেস উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। পাল্টা বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) চিন্ময় ইস্যুতে মুখ খুলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভায় প্রতিবেশী বাংলাদেশে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তবে এ বিষয়টি অন্য একটি দেশের সঙ্গে সম্পর্কিত হওয়ায় তিনি এ নিয়ে মন্তব্য করতে চান না বলে স্পষ্ট করে জানিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কোনো ধর্মের ওপরেই আঘাত আসুক আমি চাই না। এখানে ইসকনের যিনি আছেন, তার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। বাংলাদেশ একটি ভিন্ন দেশ। ভারতের সরকার এটি দেখবে। এটি আমাদের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে না। আমাদের এ নিয়ে কথা বলা বা হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। যদিও আমরা মনে মনে দুঃখিত হই, তবু আমরা কেন্দ্রের নির্ধারিত নীতিগুলো অনুসরণ করব।”
এদিকে ভারতের সংসদে বাংলাদেশ ইস্যুতে আলোচনা করেছেন দেশটির সংসদ সদস্যরা। এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর কথিত সহিংসতা ও হামলার ঘটনা বাড়ছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনজনিত উদ্বেগ নিয়ে ভারতের সংসদে এই প্রশ্ন তোলা হয়।
জবাবে ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন সিং বলেন, গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে হিন্দু মন্দির ও দেব-দেবীর অপবিত্রতা ও ক্ষয়ক্ষতির বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে। ভারত সরকার এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ঢাকার তাঁতীবাজারে পূজা মণ্ডপে হামলা এবং ২০২৪ সালে দুর্গাপূজার সময় সাতক্ষীরার যশোরেশ্বরী কালী মন্দিরে চুরির ঘটনা ঘটেছে। সরকার হিন্দুসহ সব সংখ্যালঘু ও তাদের উপাসনালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ সরকারকেও আহ্বান জানিয়েছে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সংসদে আরও বলেন, সংখ্যালঘুসহ বাংলাদেশের সব নাগরিকের জীবন ও স্বাধীনতা রক্ষার প্রাথমিক দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকারের।