অবাক বিশ্ব! শেষ বল পর্যন্ত লড়ে গেলেন ইমরান খান এবং ‘সেঞ্চুরি’।
১৯৯২ সালে পাকিস্তানের বিশ্বকাপ জয় যে এখনো কারও কারও কাছে রূপকথার মতো। যে রূপকথার পেছনে ছিল একজন নেতা, একজন অদম্য ক্যাপ্টেন, একটা ‘লার্জার দ্যান লাইফ’ চরিত্র ইমরান খান।
সেবার পরাজয় দিয়েই বিশ্বকাপ শুরু। প্রথম পাঁচ ম্যাচে মাত্র এক জয়, এক ম্যাচে তো ৭৪ রানে অলআউট। দলে ইনজুরি, অন্তর্দ্বন্দ্ব-এসব কিছু ছাপিয়েও বিশ্বকাপ জয়। আর ৩০ বছর পর এসেও আরেক ইতিহাস। ২০২৪-এর সেই ইতিহাস মাঠের নয়, ভোটের।
এরপর রাজনীতিতে প্রবেশ। প্রতিষ্ঠা করলেন পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ (পিটিআই)। আর রাজনীতিতে ঢুকেই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার শীর্ষে। ২০১৮ সালে ক্ষমতায় এলে ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। সেনাবাহিনীর সমর্থনে প্রধানমন্ত্রী। এরপর সেনাবাহিনীর সঙ্গে মতানৈক্য, হারালেন ক্ষমতা। ঢোকানো হয় জেলে।
রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়ার চিন্তায় বারবার সাজা দেওয়া হলো। নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারলেন না। তার মনোনীত প্রার্থীদের দলের প্রতীক ‘ব্যাট’ দেওয়া হলো না। কিন্তু কোনো কিছুতেই তাকে দমিয়ে রাখা যায়নি।
ইমরান খান পাকিস্তানের তরুণদের উজ্জীবিত করেছেন। প্রেরণা দিয়েছেন ভবিষ্যতের। তরুণ ভোটররা তাই ইমরানকে বেছে নিলেন। জয়ী করলেন জেলে নির্যাতিত ইমরান খানকে।
এআই ব্যবহার করে ভোটের প্রচারণা
ভোটের মাঠে ইমরানের প্রার্থীদের প্রচারণায় বাধা দেওয়া হয়েছিল। করতে পারেননি সভা-সমাবেশ। ভিন্নপথে নেতারা নির্বাচনে ভোটের প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন। ভার্চুয়াল মাধ্যমে নেতা-কর্মীরা ভোটারদের সঙ্গে সংযোগ তৈরি করেছেন। দলের প্রধান ইমরান খানের বক্তব্য প্রচারিত হতো এইআই ব্যবহার করে সামাজিক বিভিন্ন মাধ্যমে। আর এতে ভোটাররা মুক্ত ইমরানের চেয়ে জেলের ইমরানে ঝুঁকে পড়লেন এবং গণরায় দিয়ে বিশ্বকে অবাক করে দিলেন।
সর্বশেষ পাকিস্তান নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ২৬৪ আসনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১০১ আসনে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা, যারা ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) সমর্থিত প্রার্থী। এরপরই পাকিস্তান মুসলিম লিগ–নওয়াজ (পিএমএল-এন) ৭৫ আসনে, পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ৫৪ ও মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট পাকিস্তান (এমকিউএম) ১৭ আসনে জয়ী হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য দল পেয়েছে ১৭টি আসন।