গত ১০ সেপ্টেম্বর ভয়াবহ প্রাণঘাতি বন্যার পর অনেকটা মানবিক বিপর্যয়ে পড়ে উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়া। এক যুগ আগে মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর পূর্ব ও পশ্চিম দুই অংশে বিভক্ত হয়ে পড়ে লিবিয়া। তবে সেই বিভাজন ভুলে সবাই এখন বন্যা দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। কমে এসেছে বিভাজন।
গত ১০ সেপ্টেম্বরের বন্যায় ১১ হাজার ৩০০ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে কর্তৃপক্ষ। নিখোঁজ আছেন হাজার হাজার মানুষ।
রাজধানী ত্রিপোলি লিবিয়ার উত্তর-পশ্চিম অংশে অবস্থিত। শহরের বাসিন্দা মোহান্নাদ বেনৌর বলেন, ‘ভয়ঙ্কর এই ট্র্যাজেডির কথা শোনার সঙ্গে সঙ্গে মানুষ সাহায্যের জন্য স্বতঃস্ফূর্ত প্রচার শুরু করে। এতে কোনও রাষ্ট্রের সমর্থন ছিল না।’
তিনি বলেন, “সোমবার থেকে প্রায় ৭০ হাজার দিনার (১৪ হাজার ৪০৯ ডলার) অনুদান পাঠানো হয়েছে। শুক্রবারেই ২০ হাজার দিনার (৪ হাজার ১৩১ ডলার) অনুদান জমা পড়েছে। খাদ্য, স্বাস্থ্যবিধি পণ্য, তোয়ালে, ওষুধের পাশাপাশি শিশু এবং নারীদের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু দিচ্ছে মানুষ।”
বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ উপকূলীয় শহর ডেরনা। ভূমধ্যসাগর ঘেঁষা শহরটি পরিণত হয়েছে মৃত্যুপুরীতে। দুটি বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে শহরটির বেশিরভাগ অংশ। ধংস্তূপের নিচে এখনও চাপা আছে অনেক মানুষ। এই অবস্থায় বড় ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশঙ্কা করছে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা।
পূর্ব লিবিয়া পরিচালনাকারী প্রশাসনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ওথমান আবদেলজালিল জানান, শহরে মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ১৬৬। চূড়ান্ত সংখ্যা আরও বেশি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা বলছে, পূর্ব লিবিয়ার বন্যায় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ৩৮ হাজার মানুষ। তাদের ৩০ হাজারই উপকূলীয় শহর ডেরনার বাসিন্দা।
সূত্র: টিআরটি ওয়ার্ল্ড