ভারতীয় ক্ল্যাসিক্যাল সংগীতের পুরোধা ব্যক্তিত্ব, কিংবদন্তি তবলাবাদক ওস্তাদ জাকির হুসেন গুরুতর অসুস্থ। হৃদরোগজনিত গুরুতর সমস্যা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন।
জাকির হুসেন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন। তার বয়স ৭৩ বছর। দীর্ঘদিন ধরে রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন। সপ্তাহ খানেক ধরে সান ফ্রান্সিসকোর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে ওস্তাদ জাকির হুসেনের মৃত্যুর খবর প্রকাশ করে টাইমস অব ইন্ডিয়া, হিন্দি, এনডিটিভিসহ আরও বেশ কিছু ভারতীয় গণমাধ্যম। এমনকি, আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শোক প্রকাশের কথাও জানানো হয়।
পরে জাকির হুসেনের ভাতিজা পরিচয় দেওয়া আমির আউলিয়া নামের একজন এক্সে এক পোস্টে বলেন, জাকির হুসেন মারা যাননি। তিনি তার চাচার শারীরিক সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন।
জাকির হুসেনকে নিয়ে প্রচারিত ভুল তথ্য সরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আমির আউলিয়া বলেন, তিনি সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় আছেন। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা তার অগণিত ভক্ত–অনুরাগীদের কাছে দোয়া চান।
জাকির হুসেনের জন্ম ১৯৫১ সালে ভারতের মুম্বাই শহরে৷ তিনি কিংবদন্তি তবলা বাদক আল্লারাখার প্রথম সন্তান। তিন বছর বয়স থেকে বাবার কাছে তবলায় তার হাতেখড়ি৷১২ বছর বয়সে বাবার সঙ্গে প্রথম কনসার্টে অংশ নিয়েছিলেন। এরপর থেকে তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে ভারত জুড়ে৷
সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে পড়াশোনা করেন জাকির হুসেন৷ ১৯৭০ পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। তারপর থেকেই শুরু হয় তাঁর আন্তর্জাতিক সংগীতাঙ্গনে বিচরণ৷ সংগীতে তার কর্মজীবনের সিংহভাগ জুড়ে রয়েছে ভারতীয় ধ্রুপদী সংগীত৷ তার তবলা দিয়ে সঙ্গ দিয়েছেন পণ্ডিত রবি শংকর, ওস্তাদ আলী আকবর খাঁ, শিব কুমার শর্মা বা কথক নৃত্য শিল্পী বিরজু মহারাজকে৷
১৯৯২ জাকির হুসেন প্রতিষ্ঠা করেন ‘মোমেন্ট রেকর্ড’৷ এর মাধ্যমে তিনি সংগীতানুরাগিদের উপহার দিয়েছেন ভারতের ধ্রুপদী সংগীতের খ্যাতিমান সেরা সংগীত শিল্পীসহ সমকালীন বিশ্বসংগীত৷ ২০০৬ সালে ‘মোমেন্ট রেকর্ড` এর মুক্তিপ্রাপ্ত অ্যালবাম ‘গোল্ডেন স্ট্রিং অফ দ্য সরোদ’ গ্র্যামি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়৷
পদ্মশ্রী, পদ্ম ভূষণ, গ্র্যামি ছাড়াও আরো বহু পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারি জাকির হুসেন।