• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

চলে গেলেন বিশ্বখ্যাত সাহিত্যিক মিলান কুন্দেরা


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ১২, ২০২৩, ০৪:৫৭ পিএম
চলে গেলেন বিশ্বখ্যাত সাহিত্যিক মিলান কুন্দেরা

বিখ্যাত কথাসাহিত্যিক মিলান কুন্দেরা মারা গেছেন। মঙ্গলবার ৯৪ বছর বয়সে প্যারিসে তার মৃত্যু হয়। বুধবার তার প্রকাশকদের একজন মুখপাত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বুধবার (১২ জুলাই) নিউইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। এতে বলা হয়, প্রকাশক গ্যালিমার্ডের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন,  মিলান কুন্দেরা দীর্ঘদিন অসুস্থতায় ভুগছিলেন।

‘ইম্মরটালিটি’, ‘দি আনবেয়ারেবল লাইটনেস অব বিয়িং’ উপন্যাসের লেখক চেক বংশোদ্ভূত মিলান সারা বিশ্বে খ্যাতিমান। সবচেয়ে বিখ্যাত ‘দি আনবেয়ারেবল লাইটনেস অব বিয়িং’ প্রকাশ হয় ১৯৮৪ সালে। ১৯৮৭ সালে তৈরি হয় চলচ্চিত্র। উপন্যাসটি মানুষের স্বাধীনতা ও আবেগকে অনুসরণ করেছে।

বিংশ শতাব্দীর প্রথম অর্ধাংশের জনপ্রিয় এ লেখকের মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। তিনি চেকস্লোভাকিয়ার ব্রানোতে ১৯২৯ সালের পয়লা এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৭ সালে এটি প্রকাশিত হলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। ওই লেখায় তিনি কমিউনিস্ট শাসনের নিষ্ঠুর চিত্র তুলে ধরেন। এ উপন্যাসকেই তার নির্বাসিত হওয়ার প্রথম ধাপ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

১৯৬৮ সালে চেকোশ্লোভাকিয়ায় আক্রমণ করে সোভিয়েত রাশিয়া। এ পদক্ষেপের সমালোচনা করায় ১৯৭৫ সালে সস্ত্রীক ফ্রান্সে নির্বাসিত হন তিনি। ফ্রান্সে নির্বাসনের সময় ইউনিভার্সিটি অব রেনেতে শিক্ষকতা করেন মিলান কুন্দেরা। ১৯৭৯ সালে কুন্দেরা ও তার স্ত্রীর নাগরিকত্ব কেড়ে নেয় চেক সরকার।

তিনি একসময় কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ছাত্রাবস্থায় কবিতা দিয়ে সাহিত্যে তার হাতেখড়ি। ফিল্ম স্কুলের শিক্ষকও ছিলেন। কুন্দেরা ছাত্রদের মধ্যে ছিলেন পরবর্তীকালে অস্কারবিজয়ী পরিচালক মিলোস ফরম্যান।

মিলান কুন্দেরা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে পছন্দ করতেন না। তার মনোভাব ছিল, লেখকরা তাদের কাজের মাধ্যমেই সবার সঙ্গে কথা বলেন। তার প্রথম উপন্যাসের নাম ‘দ্য জোক’।

তার অন্যান্য বইয়ের মধ্যে রয়েছে ‘লাইফ ইজ এলসহোয়ার’ ও ‘দ্য বুক অব লাফটার অ্যান্ড ফরগেটিং’। 

ফরাসি দৈনিক লে মন্ডেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, রাজনৈতিকভাবে চিহ্নিত করে তার লেখার ভার কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এতে প্রকৃত তাৎপর্য অস্পষ্ট হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

মিলান কুন্দরা প্রধানত চেক ভাষার লেখক। তবে তিনি ফরাসি ভাষাতেও লিখেছেন।

কুন্দেরার স্যাটায়ার ও কবিতার মতো গদ্য লেখনী জীবনের বিভিন্ন চিত্তাকর্ষক দিককে পাঠকের সামনে উন্মোচন করেছে।

তার সমালোচনামূলক গ্রন্থ ‘আর্ট অব নোভেল (১৯৮৬)’ এ তিনি জীবন সম্পর্কে বলেন, “(এটি) একটি ফাঁদ, যা আমরা সব সময়ই জেনে এসেছি: আমাদের সম্মতি না নিয়েই আমাদের জন্ম দেওয়া হয়, আমরা এমন এক দেহে আটকা পড়ি যা আমরা নিজেরা পছন্দ করে বাছাই করিনি এবং আমাদের একমাত্র নিয়তি হচ্ছে অবধারিত মৃত্যু।”

২০১৩ সালে ১৩ বছর বিরতির পর আবারও নতুন এক উপন্যাস প্রকাশ করেন কুন্দেরা। দ্য ফেস্টিভাল অব ইনসিগনিফিকেন্স বইটি মিশ্র প্রতিক্রিয়া অর্জন করে।

২০১৯ সালে চেক প্রজাতন্ত্র কুন্ডেরার নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেয় এবং ২০২৩ সালে তার আদি নিবাস বিরনোতে মিলান কুন্দেরা পাঠাগার স্থাপিত হয়।

আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর

Link copied!