ছয়জন খ্যাতনামা সাংবাদিককে টুইটার থেকে বাদ দেওয়ার ঘটনায় ইলন মাস্কের নিন্দা করেছে জাতিসংঘ ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। এ বিষয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তাকে সতর্ক করেছে সংস্থা দুটি।
বিবিসি জানায়, সম্প্রতি এই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে তার পরিবারকে ঝুঁকিতে ফেলার অভিযোগ আনেন ইলন। এই অভিযোগের ভিত্তিতে কোনো ধরনের সতর্কতা করা ছাড়াই সিএনএন, নিউইয়র্ক টাইমস ও ওয়াশিংটন পোস্টে কর্মরত এই সাংবাদিকদের সামাজিক মাধ্যমটিতে নিষিদ্ধ করা হয়। এর প্রতিবাদে শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) ইলন মাস্কের কড়া সমালোচনা করেছে জাতিসংঘ ও ইইউ।
গত ২৭ অক্টোবর টুইটারের দায়িত্ব নেওয়ার পর নানা বিতর্কের জন্ম দেন ইলন। তারপর এ ঘটনায় নতুন করে আবার বিতর্কের সৃষ্টি হয়।
ইইউ কমিশনার ভেরা জোরোভা এক টুইটে বলেন, “টুইটার থেকে সাংবাদিকদের স্বেচ্ছাচারী কায়দায় বাদ দেওয়ার খবর উদ্বেগজনক। ইলন মাস্কের এ বিষয়ে সতর্ক হওয়া উচিত। চূড়ান্ত সীমা আছে এবং নিষেধাজ্ঞাও, খুব শিগগির।” তা ছাড়া ইউরোপীয় আইনে সামাজিক মাধ্যমটিকে বড় অঙ্কের জরিমানা গুনতে হতে পারে বলেও সতর্ক করেছেন তিনি।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র বলেছেন, “যখন সারা বিশ্বে সাংবাদিকেরা সেন্সরশিপ, শারীরিক হুমকিসহ আরও খারাপ পরিস্থিতি মোকাবিলা করছেন, তখন এমন পদক্ষেপ বিপজ্জনক নজির।”
সবশেষ এই বিতর্ক শুরু হয় মাস্ক গত বুধবার ‘ইলনজেট’ নামের একটি টুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়ার পর। এই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ইলন মাস্কের ব্যক্তিগত উড়োজাহাজের গতিবিধির ওপর নজর রাখা হতো।
মাস্ক জানান, লস অ্যাঞ্জেলেসে তার এক সন্তানকে বহন করা গাড়িকে ‘এক বেপরোয়া উত্ত্যক্তকারী’ অনুসরণ করার পর এই পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি ছিল। মাস্ক এ ঘটনার জন্য তার ব্যক্তিগত উড়োজাহাজের গতিবিধি নজর রাখাকে দায়ী করছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
ইলনজেট অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়াসহ ঘটনাটি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেন কয়েকজন সাংবাদিক। বিষয়টিকে তিনি ও তার পরিবারকে ‘গুপ্তহত্যায় অবস্থান জানিয়ে দেওয়ার’ শামিল বলে মন্তব্য করেন মাস্ক।
এ নিয়ে টুইটারে এক লাইভে নিজের দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ দেননি মাস্ক। তবে তিনি বলেন, “কয়েকজন সাংবাদিকের টুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সবাইকে সমান চোখে দেখা হবে। সাংবাদিক বলে তারা বিশেষ কেউ নন।”
এই পদক্ষেপের কড়া সমালোচনা করে সাংবাদিকদের সংগঠনগুলো। একই সঙ্গে টুইটারের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়নের বিষয়টিও সামনে আনে। গত এক দশকে সাংবাদিকতার জন্য টুইটার গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে উঠেছে।