অবরুদ্ধ গাজার আকাশ ও স্থলপথে ধারাবাহিক হামলার কারণে ইসরায়েল সীমান্তে নিজেদের সেনা উপস্থিতি বাড়িয়েছে জর্ডান। ফিলিস্তিনি নাগরিকদের জোর করে জর্ডান নদীর ওপারে পাঠানোর বিষয়েও হুঁশিয়ারি দিয়েছে দেশটি। ।
এদিকে সাময়িক যুদ্ধবিরতির পর গাজায় আবারও অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
পশ্চিম তীর থেকে ফিলিস্তিনিদের ব্যাপকভাবে উৎখাতে ইসরায়েলকে বাধা দিতে জর্ডান তাদের সক্ষমতায় থাকা সব উপায় ব্যবহার করবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বিসের খাসাওনেহ। ইসরায়েল-গাজার চলমান সংঘাতে জর্ডানের দীর্ঘদিনের শঙ্কাকে আলোড়িত করেছে। দেশটিতে মূলত বিশাল সংখ্যক ফিলিস্তিনি শরণার্থী এবং তাদের বংশধররা বাস করেন। গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় ধারাবাহিকভাবে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে প্রায় ১৭ লাখ মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) ইসরায়েলের সঙ্গে ১৯৯৪ সালের শান্তি চুক্তির কথা উল্লেখ করে জর্ডানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কোনো ধরনের স্থানচ্যুতি বা এ জাতীয় কোনো পরিস্থিতির জন্য শরণার্থীদের ঢল তৈরি হবে। জর্ডান এটিকে যুদ্ধ হিসেবে দেখবে আর এতে শান্তিচুক্তি লঙ্ঘিত হবে।”
বিসের খাসাওনেহ আরও বলেন, ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত করার মাধ্যমে তাদের অধিকার ক্ষুণ্ণ করা হবে। সাথে জর্ডানের জাতীয় নিরাপত্তাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ইসরায়েলের সঙ্গে দ্বিতীয় আরব দেশ হিসেবে জর্ডান শান্তিচুক্তি করেছিল। এমনকি তাদের শক্তিশালী নিরাপত্তা সম্পর্কও রয়েছে। কিন্তু ইসরায়েলে ডানপন্থী সরকারের উত্থানের পর তা ভেঙে পড়েছে।
খাসাওনেহ বলেন, “ইসরায়েল যদি তার দায়িত্বকে অসম্মান করে, চুক্তি লঙ্ঘন করেই চলে তাহলে শান্তিচুক্তিটি একটি কাগজের টুকরোতে পরিণত হবে।” জর্ডানের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য সব ধরনের হুমকি মোকাবিলায় বিকল্প সকল পথ উন্মুক্ত থাকবে বলে জানান তিনি। তিনি আরও জানান, সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েল সীমান্তে সেনা মোতায়েন করা দেশটির নিরাপত্তা রক্ষার ব্যবস্থার একটি অংশ।
গত ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে অতর্কিত হামলা চালায়। এ হামলায় ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি নাগরিক নিহত হন। হামাস জিম্মি করে ২৪০ জনের বেশি ইসরায়েলিকে। এর জবাবে ইসরায়েল গাজায় নৃশংসভাবে হামলা শুরু করে। হামলায় এ পর্যন্ত ১৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ৫ হাজার ৬০০ শিশু।