উত্তর গোলার্ধে গত কয়েক সপ্তাহের রেকর্ড তাপপ্রবাহ চলছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপপ্রবাহ আগের তুলনায় কয়েক গুণ বেড়েছে। ঠিক এ রকম এক সময়ে বৈশ্বিক উষ্ণতা মোকাবিলার প্রচেষ্টাকে আরও পুনরুজ্জীবিত করতে চীনে পৌঁছেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরি।
সোমবার (১৭ জুলাই) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। জন কেরি চার দিনের সফরে রোববার চীনে পৌঁছান।
বিশ্বে অধিক পরিমাণে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনকারী দেশগুলোর একটি হলো চীন। দেশটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক সময়ের বাণিজ্য বিরোধ, সামরিক উত্তেজনা এবং গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে উত্তেজনার তৈরি করেছে। এ উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে এ বছর আরও দুজন উচ্চপর্যায়ের মার্কিন কূটনৈতিক চীন সফর করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এবং ট্রেজারি সেক্রেটারি জ্যানেট ইয়েলেনের পর কেরি হলেন তৃতীয় শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তা যিনি এই বছর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার চেষ্টা করতে চীন সফর করছেন।
রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারকারী সিসিটিভি বেইজিংয়ে কেরির আগমন প্রসঙ্গে বলেছে, চীন এবং যুক্তরাষ্ট্র জলবায়ুসংক্রান্ত বিষয়ে গভীর আলোচনা করবে।
একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরি তার সমকক্ষ চীনের জি জেনহুয়ার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করবেন। আলোচনায় মিথেন নির্গমন হ্রাস, কয়লার ব্যবহার সীমিত করা, বন উজাড় রোধ এবং দরিদ্র দেশগুলোকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সহায়তা করার মতো বিষয়গুলো গুরুত্ব পাবে।
পর্যবেক্ষকরা জানিয়েছেন, কেরি এবং জি ২০ বছরের বেশি সময় ধরে কূটনীতিতে একটি বিশেষ জায়গা তৈরি করেছেন। তারা দুজন মার্কিন শুল্ক এবং চীনা সৌর প্যানেল এবং ব্যাটারি উপাদান আমদানিতে চীনের আপত্তি এবং অন্যান্য বিধিনিষেধ নিয়েও আলোচনা করবেন।
যদিও উভয় দেশ বলছে বিভিন্ন বিষয়ে তাদের মতবিরোধ থাকলেও জলবায়ু পরিবর্তনে সহযোগিতা করতে আন্তরিক রয়েছে।
বেইজিংয়ের গ্রিনপিস থেকে লি শুও বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, নির্ধারিত আলোচনায় দেখা গেছে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্পর্শকাতর বিষয় জলবায়ু পরিবর্তন।
মার্কিন বিশেষ এই দূতের দপ্তর জানিয়েছে, জলবায়ুবিষয়ক পদক্ষেপ বাস্তবায়ন ও এই নিয়ে ক্রমবর্ধমান উচ্চাশার পাশাপাশি একটি সফল কপ-২৮ সম্মেলন নিশ্চিত করতে তিনি চীনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। জাতিসংঘের এই জলবায়ুবিষয়ক সম্মেলন চলতি বছরের শেষ দিকে অনুষ্ঠিত হবে।