ভারতের জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত সাংবিধানিক দিক থেকে বৈধ বলে রায় দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার (১১ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ এ রায় দেন।
রায়ে বলা হয়, ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট এই রাজ্যের জন্য নির্ধারিত সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ খারিজ করার যে সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রপতি নিয়েছিলেন, তা অসাংবিধানিক নয়। কারণ, সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ ছিল এক অস্থায়ী ব্যবস্থা।
জম্মু ও কাশ্মীরকে পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদা দিতে কেন্দ্রকে নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। অর্থাৎ আর তা কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের মধ্যে পড়বে না। রাজ্যের মর্যাদা দিয়ে জম্মু ও কাশ্মীরে ২০২৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে সেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যে বিধানসভার শেষ নির্বাচন হয়েছিল। ২০১৮ সালের ২১ নভেম্বর জম্মু-কাশ্মীরের সেই বিধানসভা ভেঙে দেওয়া হয়। সেই অর্থে গত ৯ বছর সেখানে বিধানসভার ভোট হয়নি।
তবে লাদাখ কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলই থাকবে বলে জানিয়েছেন দেশটির শীর্ষ আদালত।
জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ অধিকার প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে ‘ঐতিহাসিক’ বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেছেন, এটি আশা, অগ্রগতি এবং ঐক্যের বার্তা দেয়।
২০১৯ সালের ৫ আগস্ট জম্মু-কাশ্মীরের জন্য সংবিধান প্রদত্ত বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করা হয়। বাতিল করে দেওয়া হয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ। একই সঙ্গে জম্মু-কাশ্মীরকে দ্বিখণ্ডিত করে গড়ে তোলা হয় দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। একটি জম্মু-কাশ্মীর, অন্যটি লাদাখ। দুই অঞ্চলের দায়িত্ব বর্তায় দুই উপরাজ্যপালের ওপর।
কেন্দ্রীয় সরকারের ওই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতে একাধিক মামলা দাখিল হয়েছিল। এসব মামলায় ওই কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। প্রায় সাড়ে চার বছর পর প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ ওই মামলাগুলো এক করে শুনানি শুরু করেন। ২ জুলাই থেকে শুরু হওয়া শুনানি ১৬ দিন চলার পর গত ৫ সেপ্টেম্বর বেঞ্চ রায় দান স্থগিত রাখেন।