কমালা হ্যারিস, নাকি ডোনাল্ড ট্রাম্প- কে হতে যাচ্ছে পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট, সেটা নিয়ে জল্পনা কল্পনার শেষ নেই জনমনে। শুধু যুক্তরাষ্ট্রই নয় সারা বিশ্ব তাকিয়ে আছে মার্কিন নির্বাচনের দিকে। যুক্তরাষ্ট্র একটি প্রাচীন গণতন্ত্রের দেশ। গণতন্ত্রের দেশ হওয়া সত্ত্বেও এদেশের জনগণ সরাসরি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে পারে না। অর্থাৎ জনগণের বেশি ভোট পেয়েও অনেক সময় প্রেসিডেন্ট হতে পারে না প্রার্থীরা। তাহলে কি সেই প্রেসিডেন্ট হওয়ার পদ্ধতি?
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভোটাররা সরাসরি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেন না। জনগণ পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার মধ্য দিয়ে মূলত একটি ‘নির্বাচকমণ্ডলী’ নির্বাচিত করেন। সেই নির্বাচক মন্ডলী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করে। এই নির্বাচকমণ্ডলীকেই বলা হয় ‘ইলেকটোরাল কলেজ’। আর সেখানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করা হয় ইলেক্টোরাল কলেজের মাধ্যমে।
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ইলেকটোরাল কলেজের ভোটসংখ্যা ৫৩৮। মোট অঙ্গরাজ্য ৫০টি। মোট অঙ্গরাজ্যের মাইন ও নেব্রাসকা- এই দুটি বাদে বাকি ৪৮টি অঙ্গরাজ্যের ইলেকটোরাল ভোট যোগ দিয়ে যে প্রার্থী ২৭০টি বা তারও বেশি ‘ইলেক্টোরাল কলেজ’ ভোট পাবেন, তিনিই হবেন পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
অঙ্গরাজ্যগুলোর জনসংখ্যার উপর নির্ভর করে সে রাজ্যে কতটি ইলেকটোরাল ভোট আছে। যেমন, ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে গত নির্বাচনে ইলেকটোরাল সংখ্যা ছিল ৫৫ টি কিন্তু এবার ৫৪ টি। কারণ সর্বশেষ আদমশুমারিতে এই রাজ্যে জনসংখ্যা কমে যাওয়ায় একটি কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট কমে গেছে। আবার সবচেয়ে ছোট অঙ্গরাজ্য আলাস্কা, সাউথ ডাকোটা, ভারমন্টতে রয়েছে ৩টি করে ইলেকটোরাল ভোট।
তাহলে কীভাবে প্রেসিডেন্ট নির্বচিত হয়? দেশের জনগণের ভোটে নির্বাচিত ইলেকটোরাল কলেজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য চূড়ান্ত ভোটটি দেন। আর এই ভোটটি হয় সাধারণ নির্বাচনের পর ডিসেম্বরের দ্বিতীয় বুধবারের পরের প্রথম মঙ্গলবার। গোপন ব্যালট পেপারের মাধ্যমেই ভোট গ্রহণ হয়। এরপর ৬ জানুয়ারি বিদ্যমান ভাইস প্রেসিডেন্টের সভাপতিত্বে ভোট গণনা শেষে জানা যায় নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল। যে প্রার্থী ২৭০টি বা তার বেশি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট পান তিনিই পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
তবে ইলেকটোরাল কলেজে টাই হলে মার্কিন আইন সভার নিম্ন-কক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভস ভোট দিয়ে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবেন।