• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইরানে ইসরায়েলের হামলা : কোন দেশ কী প্রতিক্রিয়া জানাল


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৬, ২০২৪, ০৫:৩১ পিএম
ইরানে ইসরায়েলের হামলা : কোন দেশ কী প্রতিক্রিয়া জানাল
ইরানে ইসরায়েলের হামলা। ছবি : সংগৃহীত

ইরানের প্রায় ২০টি স্থানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। এই হামলায় দুই সেনা নিহতসহ কিছু ক্ষয়ক্ষতির কথা জানিয়েছে ইরান। এ ঘটনার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ইরানে ইসরায়েলের হামলা পর যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।

যুক্তরাজ্য
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমার বলেছেন, “ইসরায়েলি হামলার জবাব দেওয়া ইরানের উচিত হবে না। আমরা সব পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানাই। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, ইরানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার অধিকার ইসরায়েলের রয়েছে। আমি একইভাবে স্পষ্ট যে, আমাদের আঞ্চলিক উত্তেজনা এড়াতে হবে এবং সব পক্ষকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানাতে হবে।”

পাকিস্তান
ইরানের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার বিরুদ্ধে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হামলা জাতিসংঘ সনদ ও আন্তর্জাতিক আইনের মারাত্মক লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এক বিবৃতিতে পাকিস্তান জানায়, এই হামলা আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার পথকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। ইতোমধ্যে অস্থিতিশীল অঞ্চলে একটি বিপজ্জনক উত্তেজনার বৃদ্ধি ঘটায়।

সংযুক্ত আরব আমিরাত
ইরানের সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। অব্যাহত উত্তেজনা বৃদ্ধি এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ওপর এর প্রভাবের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দেশটি। 
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে ঝুঁকি এড়াতে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সংযম ও প্রজ্ঞা অনুশীলনের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছে।

ওমান
ইসরায়েলি হামলাকে ইরানের সার্বভৌমত্বের ‘সুস্পষ্ট লঙ্ঘন’ উল্লেখ করেছে ওমানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারা বলেছে, ইসরায়েলি বিমান হামলা সহিংসতার চক্রকে উসকে দিচ্ছে এবং উত্তেজনা কমানোর প্রচেষ্টাকে দুর্বল করে দিচ্ছে। আগ্রাসন বন্ধে এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর ভূখণ্ডে সহিংসতা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আবারও আহ্বান জানানো হয়েছে।

মালয়েশিয়া
মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইসরায়েলি হামলাকে আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে, যা আঞ্চলিক নিরাপত্তাকে মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে ফেলেছে।

এক বিবৃতিতে দেশটি জানায়, মালয়েশিয়া অবিলম্বে শত্রুতা বন্ধ এবং সহিংসতার চক্র বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ইসরায়েলের অব্যাহত হামলা এ অঞ্চলকে বৃহত্তর যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছে।

মিশর
মিশরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ইরানের ওপর ইসরায়েলি বিমান হামলাসহ মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধিতে মিশর গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ সব পদক্ষেপের নিন্দা জানাই।

যুক্তরাষ্ট্র
ইসরায়েলের হামলাকে আত্মরক্ষার একটি মহড়া উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র শন স্যাভেট সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা ইরানকে ইসরায়েলের ওপর হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি, যাতে আর কোনো উত্তেজনা না বাড়তে পারে। এই হামলার যেন অবসান ঘটে।”

শন স্যাভেট আরও বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র এই অভিযানের সঙ্গে যুক্ত নয়। মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে কূটনীতি ত্বরান্বিত করা এবং উত্তেজনা কমানোই আমাদের লক্ষ্য।”

কাতার
এক বিবৃতিতে কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উত্তেজনা বৃদ্ধির ফলে যে গুরুতর প্রতিক্রিয়া হতে পারে, সে সম্পর্কে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সব পক্ষকে সংযম অনুশীলন, সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে বিরোধ নিষ্পত্তি এবং এই অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত করতে পারে, এমন যে কোনো কিছু এড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে দেশটি।

সৌদি আরব
ইরানের সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে চালানো ইসরায়েলি হামলাকে ‘সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন’ এবং আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে নিন্দা জানিয়েছে সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সব পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন এবং উত্তেজনা হ্রাস করার আহ্বান জানিয়েছে।

এক বিবৃতিতে সৌদি আরব জানায়, এই অঞ্চলে অব্যাহত উত্তেজনা বৃদ্ধি এবং সংঘাতের সম্প্রসারণকে প্রত্যাখ্যান করে সৌদি আরব তার দৃঢ় অবস্থান নিশ্চিত করছে। এই অঞ্চলের দেশ ও জনগণের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলে এমন সবকিছু প্রত্যাখ্যান করে সৌদি।

ইরাক
এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি কর্মকাণ্ডের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতার নিন্দা জানিয়েছেন ইরাকের মুখপাত্র বাসিম আলাওয়াদি।

এক বিবৃতি ইরাক জানায়, দখলদার ইহুদিবাদী সত্তা ইরানি লক্ষ্যবস্তুসহ নির্লজ্জ হামলার মাধ্যমে এই অঞ্চলে তার আগ্রাসী নীতি অব্যাহত রেখেছে এবং সংঘাতকে আরও বিস্তৃত করছে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, গাজা ও লেবাননে যুদ্ধবিরতির আহ্বান এবং এ অঞ্চলে স্থিতিশীলতার সমর্থনে ব্যাপক আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করছে ইরাক।

Link copied!