যুদ্ধ-বিগ্রহ ও রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে ইসরায়েলের অভিজাত, উদারপন্থি ও ধর্মনিরপেক্ষদের বড় একটি অংশ দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন চিকিৎসক, অধ্যাপক, প্রযুক্তিবিদসহ সৃজনশীলরা। এসব পেশাজীবীদের মধ্যেই দেশ ছাড়ার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। গত রোববার (৬ অক্টোবর) প্রকাশিত সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত এক বছরে কতজন ইসরায়েলি দেশ ছেড়েছেন, তার নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা পাওয়া যায়নি।
তবে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজ জানিয়েছে,ছে, ২০২৩ সালে গাজা যুদ্ধের আগেই ৩০ থেকে ৪০ হাজার ইসরায়েলি দেশ ছেড়েছেন। যারা দেশ ছেড়েছেন তারা সবাই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বিচার ব্যবস্থার সংস্কারে চরম বিরক্ত।
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসরায়েলের সার্বিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ ও উদারপন্থিদের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। ২০১৫ সালে এক সমীক্ষায় নিজেদের ধর্মনিরপেক্ষ দাবি করেছিলেন ৪৫ শতাংশ ইসরায়েলি। ২০২৩ সালে এসে সেই সংখ্যা নেমে এসেছে ৪০ শতাংশে। গত এক বছরে তা আরও কমেছে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
গার্ডিয়ানের মতে, গত বছর ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ইসরায়েলে মানুষের মধ্যে রক্ষণশীল চিন্তাভাবনা অনেক বেড়েছে। দেশের সিংহভাগ নাগরিকই যুদ্ধের পক্ষে। যুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া নাগরিকরা তাই সামাজিকভাবে কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন। যে কারণে অতিরক্ষণশীল ইহুদিদের চাপে উদারপন্থিদের একটি অংশ দেশ ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন।
ইসরায়েলের নোবেলজয়ী অধ্যাপক আহারন চিহানোভার দাবি করেন, “ধর্মনিরপেক্ষ ইসরায়েলিদের মাঝে নীরবে দেশ ছাড়ার প্রবণতা অনেক বাড়ছে। যাকে আমরা নীরব প্রস্থান বলি। কারণ তারা বিমানে উঠার আগ পর্যন্ত কাউকে কিছু জানাবে না।”
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি গণহত্যা শুরু হওয়ার পর দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া দ্রোর সাদত বলেছেন, “ইসরায়েলে নেতানিয়াহু-বিরোধী রাজনৈতিক একটা গোষ্ঠী রয়েছে। তবে বামপন্থী লিবারেলদের মাঝেও অনেকে প্রতিশোধের কথা বলছেন। গাজায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড দেখে বলছেন, ‘এটা কেবলই একটা যুদ্ধ’।”