ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার মধ্যাঞ্চলের আল-আকসা মারটায়ার্স হাসপাতালে ইসরায়েল ব্যাপক বোমাবর্ষণ চালিয়েছে। এর ফলে সেখানকার কয়েক শ রোগী ও কর্মী নিখোঁজ রয়েছেন। খবর আল-জাজিরার
সোমবার (৮ জানুয়ারি) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও জাতিসংঘ বলেছে, ইসরায়েলি হামলায় আল-আকসা মারটায়ার্স হাসপাতালের বেশির ভাগ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী সেখান থেকে চলে যেতে বাধ্য হন। প্রায় ৬০০ রোগীই হাসপাতাল ছাড়ে। কিন্তু তারা কোথায় আছে, তা জানা যায়নি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও জাতিসংঘ আরও বলেছে, উপত্যকাটিতে ইসরায়েল ব্যাপক বোমাবর্ষণ করছে। ফলে প্রতি মুহূর্তে আহত ব্যক্তিরা আল-আকসা হাসপাতালে ভিড় করছেন। ৩০ শতাংশের মতো স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন সেখানে। প্রয়োজনের চেয়ে অনেক কম চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী দিয়ে চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
গাজার মধ্যাঞ্চলের দেইর এল-বালাহের এই হাসপাতালেই কেবল চিকিৎসা সেবাদান চলছে। রোববার সেটি পরিদর্শন করেন ডব্লিউএইচও ও জাতিসংঘের মানবিক সহায়তাবিষয়ক সংস্থা ওসিএইচএর কর্মীরা। তারা এ-ও বলেন, ব্যাপক বোমাবর্ষণ থেকে বাঁচতেও লোকজন হাসপাতালটিতে ভিড় করছে।
এ প্রসঙ্গে ডব্লিউএইওর কর্মকর্তা সি কাসি বলেন, প্রতি মুহূর্তে হাসপাতালে রোগী আসছে। কিন্তু হামলার ক্ষত নিয়ে জরুরি বিভাগে আসা শত শত মানুষকে সেবা দেওয়ার জন্য সেখানে কেবল পাঁচজন চিকিৎসক রয়েছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, আল-আকসা মারটায়ার্স হাসপাতাল আহত ব্যক্তিতে ভরে গেছে। কিন্তু সেখানে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী বলতে গেলে নেই। হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সুরক্ষা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। গতকাল গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, আগের ২৪ ঘণ্টায় ২৪৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৫১০ জন আহত হয়েছে। এতে এ পর্যন্ত নিহত হলো ২৩ হাজার ৮৪ জন ফিলিস্তিনি।
মেডিকেল এইড ফর প্যালেস্টাইন (এমএপি) এবং ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটি বলেছে, ইসরায়েলের সামরিক তৎপরতা বাড়ার ফলে তাদের জরুরি সেবাদানকারী দল কার্যক্রম বন্ধ এবং হাসপাতাল ত্যাগ করতে বাধ্য হন।
ডব্লিউএইচও বলেছে, গাজার উত্তরাঞ্চলে কোনো হাসপাতালে আর চিকিৎসাদান চলছে না। ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস বলেন, আল-আকসা হাসপাতালটির মেঝেতে রক্ত পড়ে আছে। এর মধ্যেই চলছে সব বয়সীদের চিকিৎসাদান। হাসপাতালটির করিডরেও বিশৃঙ্খলা দেখেছেন জাতিসংঘের এই সংস্থার কর্মীরা।
তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস আরও বলেন, চলমান হামলায় গাজার বেশির ভাগ হাসপাতালই বন্ধ হয়ে গেছে। যেগুলো এখনো চলছে, সেগুলোর মধ্যে আল-আকসা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ। ফলে গাজাবাসীর জীবন বাঁচাতে এই হাসপাতাল সুরক্ষিত রাখা এবং সেবাদানের উপযোগী রাখা খুব জরুরি।