ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের সামরিক গোয়েন্দা প্রধানকে হত্যার দাবি করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। খবর স্কাই নিউজের।
শুক্রবার (২১ মার্চ) এক্স-এ পোস্টে করা একটি বিবৃতিতে, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) নিহত হামাস নেতার নাম ওসামা তাবাশ বলে জানিয়েছে। আইডিএফের দাবি, ওসামা তাবাশ হামাসের নজরদারি এবং স্থলভাগে যুদ্ধ কৌশল ইউনিটের প্রধান ছিলেন।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ওসামা তাবাশ ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরে ইসরায়েলে হামলার সময় হামাস যোদ্ধাদের অনুপ্রবেশের পরিকল্পনাকারী ও সমন্বয়ক ছিলেন। দক্ষিণ গাজায় একটি অভিযানে তাকে ‘নির্মূল’ করা হয়েছে। কখন বা কোথায় তাকে হত্যা করা হয়েছে সে ব্যাপারে কিছু জানায়নি আইডিএফ।
এদিকে ইসরায়েলের এ দাবির বিষয়ে হামাসের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ জানিয়েছেন, তিনি স্থল বাহিনীকে গাজার আরো গভীরে অগ্রসর হতে এবং আরো জমি দখল করতে নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে জিম্মিদের মুক্তির জন্য হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করা যায়।
ইসরায়েল কাটজ বলেছেন, হামাস যত বেশি অপহৃতদের মুক্তি দিতে অস্বীকৃতি জানাবে, তত বেশি এলাকা ইসরায়েলের কাছে হারাবে।
এর আগে, মঙ্গলবার যুদ্ধবিরতি ভেঙে গাজায় পুনরায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়েছিল। এরপর ইসরায়েল এবং হামাস প্রথম পর্যায়ের পরে যুদ্ধবিরতি কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে তা নিয়ে একমত হতে ব্যর্থ হয়। গত মঙ্গলবার থেকে গাজায় ফের বিমান হামলা এবং বুধবার থেকে স্থল অভিযান শুরুর ঘোষণা দেয় ইসরায়েল।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানান, তারা পূর্ণশক্তিতে যুদ্ধ পুনরায় শুরু করেছেন এবং যেকোনো যুদ্ধবিরতি আলোচনা এখন ‘আগুনের মুখেই’ হবে।
হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য চলতি মাসের শুরুতে ইসরায়েল গাজায় প্রবেশকারী সমস্ত খাদ্য, জ্বালানি এবং চিকিৎসা সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। এখন ইসরায়েল সেনা এবং কঠোর সামরিক শক্তি ব্যবহার করে হামাসকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত নতুন চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করার চেষ্টা করছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। এতে আক্রমণে প্রায় ১২০০ জন নিহত এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। ইতিমধ্যেই বেশিরভাগ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৮ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, পাশাপাশি ঘরবাড়ি ও অবকাঠামোতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে।