গাজায় এ পর্যন্ত ১৮ হাজার টন বোমা ফেলেছে ইসরায়েল। হত্যা করা হয়েছে নারী শিশুসহ প্রায় সাড়ে আট হাজার ফিলিস্তিনিকে। নিহতদের মধ্যে তিন হাজারেরও বেশি রয়েছে শিশু ও কিশোর।
গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীগোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলের দখলদারিত্বের প্রতিবাদে অপারেশন ‘আল আকসা ফ্লাড’ নামে অপারেশন করে ১৪০০ ইসরায়েলিকে হত্যা করে। জিম্মি করে আরও ২৪০ জনকে। এরপর থেকে ইসরায়েল ফিলিস্তিনের গাজায় অবিরাম বোমা হামলা করে যাচ্ছে।
গাজায় এখন পর্যন্ত যে পরিমান বোমা ফেলা হয়েছে তা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের হিরোশিমায় ফেলা বোমার তুলনায় দেড় গুণ বেশি। এই তথ্য জানিয়েছেন অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার কর্মকর্তারা।
গাজায় হামাস নিয়ন্ত্রিত সরকারি অফিসের গণমাধ্যমবিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা সালামা মারুফ বলেন, ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় ৮৫টি সরকারি ভবন ধ্বংস করেছে। পাশাপাশি গাজায় ৪৭টি মসজিদ একেবারে গুঁড়িয়ে দিয়েছে এবং তিনটি গির্জার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে।
তিনি বলেন, ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গাজায় ২ লাখের বেশি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৩২ হাজার ৫০০ ভবন পুরোপুরি বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। গাজায় ২০৩টি স্কুলে হামলা চালিয়ে সেগুলোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে ইসরায়েল। ৪৫টি স্কুল পুরোপুরি পাঠদানের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। তবে ইসরায়েলের হামলা বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির পুরো পরিসংখ্যান তৈরি সম্ভব হয়নি।
জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী, ধর্মীয় স্থাপনা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য বেসামরিক স্থাপনায় হামলা চালানো নিষিদ্ধ। কিন্তু ইসরায়েল বলেছে, হামাসের যোদ্ধারা এসব ভবনের ভেতরে অথবা আশপাশে আশ্রয় নিয়েছে। যে কারণে ইসরায়েলি বাহিনী এসব ভবনকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে।
মারুফ বলেছেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজার ৯০৮টি পরিবারকে একেবারে মুছে দিয়েছে। অর্থাৎ ইসরায়েলি হামলার শিকার এই পরিবারগুলোর কোনও সদস্যই আর বেঁচে নেই।
চলমান এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ৫৪২ শিশু ও ২ হাজার ১৮৭ নারী নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও ২১ হাজার ৫৪৩ ফিলিস্তিনি। আর হামাসের হামলায় ইসরায়েলিদের প্রাণহানির সংখ্যা দেড় হাজার ছাড়িয়ে গেছে। নিহতদের মধ্যে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর ৩২৬ সৈন্য রয়েছে।
সূত্র- আনাদোলু ও টাইমস অব ইসরায়েল।