ভারতের লোকসভা নির্বাচনী প্রচারণার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দেয়া ১৭৩টি বক্তৃতার মধ্যে ১১০টিই ছিল মুসলিমবিদ্বেষী। যেসব বক্তব্যের উদ্দেশ্য ছিল বিভ্রান্তিমূলক প্রচার চালিয়ে সংখ্যাগুরু হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করা এবং রাজনৈতিক বিরোধিতাকে দুর্বল করা।
এক বিবৃতিতে এমনটাই জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতৃত্বে ২০২৪ সালের নির্বাচনী প্রচারে দেয়া বক্তৃতায় প্রায়শই মুসলিম এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক মন্তব্য করেছেন।
“ইন্ডিয়া: হেট স্পিচ ফুয়েলড মোদি’স ইলেকশন ক্যাম্পেইন” শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংসদ নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধি কার্যকর হওয়ার পর থেকে প্রধানমন্ত্রী মোদির ১৭৩টি বক্তব্য পর্যবেক্ষণ করে ১১০টিতে মুসলিমবিদ্বেষী মন্তব্য পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মোদির ঘৃণা উদ্রেককারী মন্তব্য করার কারণে ভারতে মুসলমান ও খ্রিস্টান—এই দুই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপরই হামলার ঘটনা বেড়েছে। তাছাড়া নির্বাচনের পর থেকে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতাও অব্যাহত রয়েছে।
গত বুধবার (১৪ আগস্ট) প্রকাশিত এইচআরডব্লিউ রিপোর্টে বলা হয়, সারা দেশে ২৮টি হামলায় ১২ জন মুসলিম পুরুষ এবং একজন খ্রিস্টান নারীর মৃত্যু হয়েছে। বিজেপি-নেতৃত্বাধীন প্রশাসনগুলো যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়াই বেআইনিভাবে মুসলিমদের বাড়িঘর, ব্যবসা এবং উপাসনালয় ধ্বংস করা হয়েছে, যা নির্বাচনের পর থেকে অব্যাহত রয়েছে।
এইচআরডব্লিউ-এর এশিয়া ডিরেক্টর ইলেইন পিয়ারসন ভারতের নির্বাচনী প্রচার বক্তৃতায় মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মিথ্যা দাবির জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং বিজেপি নেতাদের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, মোদি প্রশাসনের অধীনে সংখ্যালঘুদের ওপর গত এক দশকের আক্রমণ এবং বৈষম্যের কারণে এই উসকানিমূলক মন্তব্যগুলো মুসলিম, খ্রিস্টান এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নির্যাতনকে আরও স্বাভাবিক করে তুলেছে।