প্রভাবশালী ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “বাংলাদেশে ইসলামি চরমপন্থা আসবে না। ধর্মের বিষয়ে বাংলাদেশের তরুণেরা খুবই পক্ষপাতহীন। তারা দেশকে নতুন করে গড়তে চান।”
ড. ইউনূসের সাক্ষাৎকারের ভিডিও ইকোনমিস্টের ওয়েবসাইটে শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) প্রকাশ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ২০২৪ সালে ইকোনমিস্টের বর্ষসেরা দেশের খেতাব পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। সাক্ষাৎকার নেন ইকোনমিস্টের বিদেশবিষয়ক সম্পাদক প্যাট্রিক ফোলিস।
বাংলাদেশে ইসলামি চরমপন্থা ফিরে আসার কিছু ঝুঁকি রয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের কর্মকর্তাদের এমন দাবির বিষয়ে প্যাট্রিক ফোলিস প্রতিক্রিয়া জানতে চান। জবাবে ড. ইউনূস আশ্বস্ত করে বলেন, “বাংলাদেশে এমন কিছু ঘটতে যাচ্ছে না। দেশের তরুণেরা খুবই উদ্যমী। ধর্মের বিষয়ে তারা খুবই পক্ষপাতহীন। এই তরুণেরা নতুন বাংলাদেশ গড়তে চান।”
এ প্রসঙ্গে ড. ইউনূস সাম্প্রতিক গণ–অভ্যুত্থানের দৃষ্টান্ত তুলে ধরে বলেন, “আসুন, আমরা তরুণদের ওপর মনোযোগ দিই, বিশেষ করে তরুণীদের ওপর। বাংলাদেশের অভ্যুত্থানে তরুণীরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। দেশের যেকোনো তরুণের মতো তারা (অভ্যুত্থানে) সামনের কাতারে ছিলেন। আমাদের তরুণ-তরুণীদের ওপর মনোযোগ দেওয়া উচিত এবং তাদের স্বপ্নগুলো যেন পূরণ হয়, তা নিশ্চিত করা উচিত।”
বাংলাদেশের নির্বাচনের পরের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে ড. ইউনূস বলেন, “আসলে আমাকে আমার কাজ থেকে সরিয়ে আনা হয়েছে। আমাকে ভিন্ন কিছু করার জন্য প্যারিস থেকে সরিয়ে আনা হয়। সুতরাং আমার জীবনে সব সময় যে কাজ করেছি, উপভোগ করেছি, তাতে ফিরে যেতে পারলে খুশি হব।”
শুরুতে বাংলাদেশ ইকোনমিস্টের বর্ষসেরা দেশ হওয়ায় ড. ইউনূসকে অভিনন্দন জানান প্যাট্রিক ফোলিস। প্রতিক্রিয়ায় ড. ইউনূস বলেন, “আমরা আনন্দিত, অত্যন্ত গর্বিত। সত্যিকার অর্থেই আমরা বড় একটি পরিবর্তন ঘটিয়েছি। ছাত্রদের কারণেই অভ্যুত্থান ঘটেছে। তখন থেকে আমরা বলছি, একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই।”
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ২০২৪ সালে ইকোনমিস্টের বর্ষসেরা দেশ নির্বাচিত হওয়ার পেছনে ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতন এবং বাংলাদেশে নতুন যাত্রা শুরুর বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।