• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইরানের অস্ত্রাগারে ভয়াবহ সব ক্ষেপণাস্ত্রের মজুত


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ২, ২০২৪, ০৫:১৯ পিএম
ইরানের অস্ত্রাগারে ভয়াবহ সব ক্ষেপণাস্ত্রের মজুত
ইরানের হাতে বিপুল পরিমাণ ভয়ঙ্কর ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলের ওপর সর্বকালের সবচেয়ে বড় হামলা চালিয়েছে ইরান। প্রায় দুইশ ব্যালিস্টিক মিসাইল নিক্ষেপ করেছে দেশটির ওপর। তবে এসব ক্ষেপণাস্ত্রের বেশিরভাগই ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র এবং জর্ডানের ক্ষেপণাস্ত্র-বিরোধী যৌথ আয়রন ডোম নিষ্ক্রিয় করে দিয়েছে। তবে এই আক্রমণের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে বিপজ্জনক আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকি বেড়ে গেছে।

তাই এই মুহূর্তে ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা ও ইসরায়েলসহ অন্যান্য বাহিনীর নিযুক্ত প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা কেমন তা নিয়েই চলছে আলোচনা। একদিকে প্রশ্ন কীভাবে এত বিপুল ক্ষেপণাস্ত্রের বেশিরভাগা নিষ্ক্রিয় করতে সক্ষম হলো ইসরায়েল ও মিত্ররা। অন্যদিকে প্রশ্ন, ইরান যদি একটি হামলায় ১৮০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়তে পারে, তাহলে দেশটির কাছে কত ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে? সেই সঙ্গে প্রশ্ন, ক্ষেপণাস্ত্রগুলো কত পাল্লা দিয়ে আক্রমণ করতে সক্ষম?

ইরানের কাছে কত ক্ষেপণাস্ত্র?
সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের (সিএসআইএস) মিসাইল থ্রেট প্রজেক্টের ২০২১ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তেহরানের কাছে রয়েছে হাজার হাজার ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। যেগুলো বিভিন্ন রেঞ্জের এবং দূরের টার্গেট ভেদ করতে সক্ষম।

তবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন সক্ষমতার এসব ক্ষেপণাস্ত্রের সঠিক সংখ্যা অজানা। চলতি ২০২৪ সালের ইরান ওয়াচ ওয়েবসাইটের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে, ইউএস এয়ার ফোর্স জেনারেল কেনেথ ম্যাকেঞ্জি কংগ্রেসকে বলেছিলেন যে ইরানের কাছে ৩ হাজারের বেশি ব্যালিস্টিক মিসাইল রয়েছে।

বলা হচ্ছে, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের গতিপথ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের সীমার বাইরে বা কাছাকাছি নিয়ে যায়। ওয়ারহেড পেলোড রকেট থেকে আলাদা হওয়ার আগে যা এটিকে ওপরে নিয়ে যায়। তারপর আবার বায়ুমণ্ডলে তার লক্ষ্যবস্তুতে ফিরে আসে। অস্ত্র বিশেষজ্ঞদের ভাষ্যমতে, ইরান ইসরায়েলের ওপর সর্বশেষ হামলায় ‘শাহাব-৩’ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে।

অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক আরমামেন্ট রিসার্চ সার্ভিসেসের (এআরইএস) গবেষণা সমন্বয়কারী প্যাট্রিক সেনফ্টের মতে, ‘শাহাব-৩’ ইরানের সব মাঝারি পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের ভিত্তি। অর্থাৎ, এই সিরিজের ওপর ভিত্তি করেই ইরান অন্যান্য মাঝারি পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করে থাকে। এটি তৈরিতে ব্যবহার করা করেছে তরল প্রপেলান্ট।

এর আগে ২০০৩ সাল থেকে ইরানের সশস্ত্র বাহিনীতে ব্যবহৃত হচ্ছে ‘শাহাব-৩’। এটি সাতশ ৬০ থেকে এক হাজার দুশ’ কেজি পর্যন্ত ওয়ারহেড বহন করতে পারে। ‘শাহাব-৩’-এর নতুন প্রকরণ গদর ও এমাদ ক্ষেপণাস্ত্রের নির্ভুলতার রেঞ্জ তিনশ মিটার বা এক হাজার ফুট। অর্থাৎ, এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো যে লক্ষ্যবস্তুকে কেন্দ্র করে ছোড়া হয় তার আশপাশের এক হাজার ফুটের মধ্যেই আঘাত হানবে।

ইরানি গণমাধ্যমগুলোর দাবি, ইসরায়েলি হামলায়, তেহরান একটি নতুন ক্ষেপণাস্ত্র ‘ফাত্তাহ-১’ ব্যবহার করেছে। তেহরান ‘ফাত্তাহ-১’-কে একটি হাইপারসনিক (যা শব্দের গতির চেয়েও কয়েকগুণ বেশি দ্রুত চলতে পারে) ক্ষেপণাস্ত্র হিসেবে বর্ণনা করেছে। এই ফাত্তাহ-১ এর গতি মাক-৫; যার অর্থ এটি শব্দের গতির পাঁচগুণ অর্থাৎ ঘণ্টায় প্রায় ৩ হাজার ৮ হাজার মাইল বা ৬ হাজার ১শ’ কিলোমিটার গতিতে চলতে সক্ষম।

তবে বিশ্লেষকেরা বলেছেন, প্রায় সব ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তাদের উড্ডয়ন পথের একটা সময়ে হাইপারসনিক গতিতে পৌঁছায়। বিশেষ করে যখন সেগুলো লক্ষ্যবস্তুর দিকে নামতে থাকে। উচ্চ গতি থাকার কারণে এগুলোকে গুলি করে ভূপাতিত করা কঠিন হয়ে যায়।

ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের রিসার্চ ফেলো ফ্যাবিয়ান হিঞ্জের মতে, ‘ফাত্তাহ-১’ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র নয়। তবে এর বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, এটি অতি দ্রুত গতিপথ বদলাতে পারে। যে কারণে এটিকে শনাক্ত করে বাধা দেয়া কঠিন।

আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর

Link copied!