কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার সাত বছর পর পুনরায় সৌদি আরবে দূতাবাস চালু করেছে ইরান। সম্পর্কে ফাটলের কারণে দূতাবাস বন্ধ করে দিয়েছিল দেশটি। মঙ্গলবার (৬ জুন) সৌদির রাজধানী রিয়াদে দূতাবাস চালু উপলক্ষে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলিরেজা বেগদালি এবং জেদ্দায় নিযুক্ত ইরানের প্রতিনিধি হাসান জারনগর আবরগৌই।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। সৌদিতে দূতাবাস পুনরায় চালু করাকে সহযোগিতার ‘নতুন যুগে প্রবেশ’ বলে আখ্যায়িত করেছে ইরান। পারস্য উপসাগরীয় দেশ ইরাক এবং ওমানের মধ্যস্থতায় দুই বছরের আলোচনার পর মার্চ মাসে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করতে সম্মত হয় ইরান। আলোচনার চূড়ান্ত পর্বে মধ্যস্থতা করেছিল চীন।
গত শুক্রবার দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদের সঙ্গে বৈঠক করেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান। ওই বৈঠকে উভয় দেশের ‘দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভালো অগ্রগতি’ নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও প্রিন্স ফারহানকে উদ্ধৃত করে বলেছে, তেহরানে সৌদি দূতাবাস পুনরায় খোলার ভিত্তি তৈরি করা হচ্ছে এবং ‘শিগগিরই’ তার তেহরান সফরের বিষয়টিও নিশ্চিত করা হচ্ছে।
এর আগে দীর্ঘদিন দূরে থাকার পর গত মার্চ মাসে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিষয়ে সম্মত হয় মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশ ইরান ও সৌদি আরব। এর ফলে প্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দেশের মধ্যে আবার বাণিজ্য এবং নিরাপত্তা সহযোগিতাও শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
অবশ্য ২০১৬ সাল থেকে মধ্যপ্রাচ্যের এই দুই বড় দেশের মধ্যে কোনও কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিল না। সেবছর সৌদি আরব এক শিয়া নেতার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পর তেহরানের সৌদি দূতাবাসে হামলা হয়েছিল। আর তারপর দুই দেশের সম্পর্কে নাটকীয় অবনতি ঘটে।
মূলত ইরানি বিক্ষোভকারীরা তেহরানে সৌদি দূতাবাসে হামলার পর ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে সৌদি আরব ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে। তারপর থেকে সুন্নি এবং শিয়া-নেতৃত্বাধীন এই প্রতিবেশীদের মধ্যে উত্তেজনা প্রায়ই জারি ছিল। এই দুই দেশ একে অপরকে নিজের আঞ্চলিক আধিপত্যের জন্য হুমকি হিসাবে বিবেচনা করে থাকে।