বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ভুয়া খবর ছড়ানোর শীর্ষস্থানে রয়েছে ভারত। বিভিন্ন অপপ্রচার ও ভুয়া তথ্যে সয়লাব হয়ে গেছে ভারতের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ সংবাদমাধ্যমগুলোও। মাইক্রোসফটের সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। সমীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ভুয়া খবর ছড়ায় ভারতেই।
সমীক্ষার ফলাফল নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিজনেস ইনসাইডার ইন্ডিয়া। তাতে বলা হয়েছে, মাইক্রোসফটের সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ভুয়া খবর ছড়ায় ভারতেই।
মাইক্রোসফটের জরিপ অনুসারে, ভারতে ৬০ শতাংশেরও বেশি মানুষ অনলাইনে ভুয়া খবরের মুখোমুখি হয়েছেন। যেখানে এ হারের বৈশ্বিক গড় ৫৭ শতাংশ। জরিপে অংশ নেওয়া অর্ধেকেরও বেশি ভারতীয় জানিয়েছেন, তারা ইন্টারনেট প্রতারণার শিকার হয়েছেন—যা বৈশ্বিক গড় ৫০ শতাংশের চেয়ে বেশি। অন্যদিকে ৪২ শতাংশ ভারতীয় বলেছেন, তারা ফিশিং বা স্পুফিংয়ের সম্মুখীন হয়েছেন।
জরিপে ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ, অনলাইন বুলিং, অনাকাঙ্ক্ষিত যৌন বার্তা, মিথ্যা তথ্য ও ভুয়া খবরসহ বিভিন্ন অনলাইন ঝুঁকির বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, ভারতে পরিবার ও বন্ধুবান্ধব কর্তৃক অনলাইনে ঝুঁকি ছড়িয়ে পড়ার গতি দ্রুত বাড়ছে। জরিপের তথ্যমতে, ২০১৮ সালের মে মাস পর্যন্ত ভারতে পরিবার ও বন্ধুদের মাধ্যমে অনলাইন ঝুঁকি ছড়ানোর হার ৯ শতাংশীয় পয়েন্ট বেড়ে ২৯ শতাংশে পৌঁছেছে।
এর আগে বিবিসির এক অনুসন্ধানেও একই ফলাফল দেখা গিয়েছিল। তবে ভুয়া খবর ছড়ানোর পেছনের শক্তি হিসেবে জাতীয়তাবাদ চিহ্নিত হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতে ব্যাপকভাবে ভুয়া খবর ছড়ানোর পেছনে প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করছে জাতীয়তাবাদ। দেশটির জাতীয় পরিচয়কে বড় করে তুলে ধরার প্রচেষ্টা ভুয়া খবর বাড়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারণ।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার রক্তাক্ত গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমই শুধু নয়, মূলধারার মিডিয়াতেও ব্যাপক মাত্রায় ভুয়া খবর বেপরোয়াভাবে প্রচারিত হচ্ছে। যা বিপজ্জনক হুমকিতে পরিণত হয়েছে।
এ বিষয়ে বিজনেস ইনসাইডারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত সরকার ভুয়া খবর মোকাবিলায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। বরং ভুয়া খবরের সংখ্যা বেড়েই চলছে। যা বড় সমস্যা হিসেবে দেখা হচ্ছে।