কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার জেরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একের পর এক পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে ভারত। পাকিস্তানিদের জন্য সার্ক ভিসা নিয়ে ভারত ভ্রমণের সুবিধা বাতিল করাসহ এ পর্যন্ত মোট পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে তারা। পাকিস্তানি কূটনীতিকদের বহিষ্কার করা হয়েছে, বন্ধ করা হয়েছে সীমান্তের প্রধান পথ।
বিবিসি বলছে, কাশ্মীরে হামলার জেরে পাকিস্তানের সঙ্গে থাকা অভিন্ন নদী সিন্ধু নদের পানিবণ্টন চুক্তি বাতিল করে ভারত। ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা অর্জনের পর ১৯৬০ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে থাকা গুরুত্বপূর্ণ অভিন্ন নদী সিন্ধু নদের পানিবণ্টনের বিষয়ে দেশ দুটি চুক্তিতে উপনীত হয়েছিল। দুটি দেশের মধ্যে নানা সময়ে বৈরী পরিস্থিতি থাকলেও সময়ে সময়ে এই চুক্তি নবায়ন হয়ে আসছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার অনলাইন বলছে, ইসলামাবাদে ভারতীয় দূতাবাস থেকে প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা, নৌ উপদেষ্টা এবং বিমানবাহিনীর উপদেষ্টাকে ফিরিয়ে নিচ্ছে ভারত। তাদের সহকারীদেরও তুলে নেওয়া হচ্ছে। একইভাবে নয়াদিল্লিতে অবস্থিত পাকিস্তানি দূতাবাসে প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা, নৌ উপদেষ্টা এবং বিমানবাহিনীর উপদেষ্টাকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করা হচ্ছে। ভারত ছাড়ার জন্য তাদের এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় দূতাবাসের সদস্য সংখ্যা ৫৫ থেকে কমিয়ে ৩০ করা হচ্ছে। আগামী ১ মে থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
আট্টারি-ওয়াঘা সীমান্ত অবিলম্বে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। উপযুক্ত নথিপত্র নিয়ে যারা এই সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছেন, তাদের ১ মে পর্যন্ত সময় দেওয়া হচ্ছে। তার মধ্যে এই সীমান্ত দিয়েই তাদের ফিরে যেতে হবে।
‘সার্ক ভিসা অব্যাহতি প্রকল্প’ (এসভিইএস)-এর অধীনে কোনো পাকিস্তানি নাগরিককে আর ভারতে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। অতীতে এই ভিসায় প্রবেশের জন্য পাকিস্তানিদের যত অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তা বাতিল করা হচ্ছে। এই ভিসা প্রকল্পের অধীনে যে সমস্ত পাকিস্তানি এখন ভারতে আছেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাঁদের দেশ ছাড়তে হবে।
উল্লেখ্য, এসভিইএস হল ‘সার্ক’-এর দেশগুলোর (বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, মলদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কা) মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি বিশেষ চুক্তি, যার মাধ্যমে ব্যক্তিগত ভিসা ছাড়াও এই সাত দেশের মধ্যে যাতায়াত করতে পারেন নাগরিকেরা। পাকিস্তানের ক্ষেত্রে এই অনুমতি তুলে নিচ্ছে ভারত।
ভারতের এসব পদক্ষেপের পর বৃহস্পতিবার বিশেষ বৈঠকে বসার কথা জানিয়েছে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ২৬ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে একজন বিদেশি নাগরিকও রয়েছে। এই হামলার প্রাথমিক তদন্তে পাকিস্তানের কিছু গোষ্ঠীর সংযোগ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।