ভারত বাংলাদেশের সাহায্য ছাড়া চলতে পারবে না বলে জানিয়েছেন ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। বার্তা সংস্থা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায়, শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) আগরতলায় এক সংবাদ সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা বলেছেন, “ভারত ও বাংলাদেশ কেউই কারও সাহায্য ছাড়া চলতে পারবে না। আমরা ইতোমধ্যে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠন করেছি এবং মৈত্রী সেতু নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। আগরতলা ও বাংলাদেশের আখাউড়ার মধ্যে রেল যোগাযোগও স্থাপিত হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “সবকিছু প্রস্তুত, তবে সাম্প্রতিক কিছু সমস্যার কারণে কার্যক্রম শুরু করা যায়নি। আমি নিশ্চিত, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এসব প্রকল্প কার্যকর হবে। কারণ, বাংলাদেশও ভারতের সহায়তা ছাড়া চলতে পারে না।”
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ ও ত্রিপুরার মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী বেশ কিছু প্রকল্প বর্তমানে স্থগিত রয়েছে। বিশেষ করে, ফেনী নদীর ওপর নির্মিত মৈত্রী সেতু সম্পূর্ণ প্রস্তুত থাকলেও এখনো ব্যবহার করা সম্ভব হয়নি। ২০২১ সালে উদ্বোধন করা এই সেতুটি দ্বিপক্ষীয় পণ্য পরিবহনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
তিনি আরও বলেন, “ফেনী সেতু, সাবরুম ইন্টিগ্রেটেড চেক পোস্ট, সিপাহিজলা জেলায় আন্তর্জাতিক অভ্যন্তরীণ জলপথ পরিবহনসহ বেশ কয়েকটি প্রকল্প উদ্বোধন করা হয়েছে বা সম্পন্ন হওয়ার পথে রয়েছে। তবে গত বছর বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে এসব প্রকল্পের অগ্রগতি থমকে আছে। আমরা আশা করছি, শিগগিরই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে এবং প্রকল্পগুলো কার্যকর করা যাবে।”
এর আগে, অবশ্য হিন্দুত্ববাদী সংগঠন হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি ত্রিপুরার আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে ভিসা ও কনস্যুলার প্রাঙ্গণে ঢুকে হামলা চালায়। ওই সময় তারা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকারও অবমাননা করে।
এ হামলায় তাৎক্ষণিক কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি রাজ্য সরকারকে। এতে বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। শেষ অবধি নিরাপত্তাহীনতাজনিত কারণে ভিসা ও কনস্যুলার সেবা কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ।
তখন বেশ শক্ত অবস্থানে থাকে ত্রিপুরা রাজ্য সরকারসহ ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। উল্টো দিকে চাপ সৃষ্টি করে বাংলাদেশ। এক মাস পার হতেই সেই চাপে নতজানু হয় রাজ্য সরকার। এমনটাই আভাস পাওয়া যায় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহার কণ্ঠে।