যুক্তরাষ্ট্রের ভোটাররা সরাসরি প্রেসিডেন্ট বা ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে পারেন না। ভোট হয় ‘ইলেক্টোরাল কলেজ’ নামের একটি পদ্ধতির মাধ্যমে। আমেরিকার ৫০টি প্রদেশ মিলিয়ে মোট ৫৩৮ জন ইলেক্টর রয়েছেন। ক্ষমতায় যেতে হলে প্রয়োজন এর ২৭০টি ভোট। কিন্তু অনেক সময়েই দেখা যায়, জনগণের ভোট বেশি পেয়েও শেষ পর্যন্ত হারতে হয়েছে প্রার্থীকে। ২০০০ ও ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এভাবেই হেরে যান দুই ডেমোক্র্যাট প্রার্থী, যথাক্রমে আল গোর এবং হিলারি ক্লিন্টন।
যুরক্তরাষ্ট্রের নিয়স অনুসারে, একজন প্রার্থী যে প্রদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট নিজের দিকে টানতে পারবেন, সেই প্রদেশের সব কটি ভোট তার হয়ে যাবে। যেমন, ক্যালিফোর্নিয়ায় ৫৫ জন ইলেক্টর রয়েছেন। কমলা হ্যারিস বা ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি এই প্রদেশে বেশি ভোট পাবেন, তিনিই প্রদেশের ৫৫ জন ইলেক্টরকে জিতে নেবেন। ১৩ ডিসেম্বর ইলেক্টরেরা প্রাদেশিক রাজধানীতে জড়ো হয়ে তাদের দলের প্রার্থীকে ভোট দেবেন। তবে নির্বাচনের এই পর্যায়টি নেহাতই আনুষ্ঠানিক। কারণ ৫ নভেম্বরের জনসাধারণের ভোট থেকেই স্পষ্ট হয়ে যাবে, রিপাবলিকান না ডেমোক্র্যাট, কোন প্রার্থী জিতছেন।
ইলেক্টোরাল পদ্ধতি নিয়ে বিতর্ক
ইলেক্টোরাল পদ্ধতিতে ভোট হওয়ার প্রধান অসুবিধা, অনেক সময়ে গোটা দেশের জনমত আর ইলেক্টর সংখ্যায় ফারাক থেকে যায়। যেমন হয়েছিল ২০১৬ সালে। সেবার জনগণের ভোটের নিরিখে ডেমোক্র্যাট দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিলারি ক্লিন্টন পেয়েছিলেন ৪৮.২ শতাংশ ভোট। অন্যদিকে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প পেয়েছিলেন ৪৬.১ শতাংশ ভোট। অর্থাৎ ট্রাম্পের চেয়ে ২.১ শতাংশ বেশি ভোট পেয়েও ইলেক্টোরাল কলেজের ভোটাভুটিতে হেরে যান হিলারি। তিনি পেয়েছিলেন ২২৭টি ইলেক্টোরাল ভোট, কিন্তু ট্রাম্প পেয়েছিলেন ৩০৪টি ভোট। টেক্সাসের মতো রিপাবলিকানদের শক্ত ঘাঁটি তো বটেই, পেনসিলভেনিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনার মতো ‘সুইং স্টেট’ তাদের বড় অঙ্কের ইলেক্টোরাল ভোট নিয়ে ট্রাম্পের ঝুলিতে চলে যাওয়ার ফলেই হোয়াইট হাউস দখল করা তার পক্ষে সম্ভব হয়েছিল।
এবারের পরিস্থিতি কী
জনমত সমীক্ষা বলছে—ট্রাম্পের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে চলেছে কমলা হ্যারিসের। কিন্তু নির্বাচন বিশ্লেষকদের মতে, ইলেক্টোরাল কলেজের ভোটে এগিয়ে ট্রাম্পই। নেভাডা, অ্যারিজোনা, মিনেসোটা, পেনসিলভেনিয়া, জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা, উইসকনসিন—এই ‘অনিশ্চিত’ প্রদেশগুলিই ঠিক করবে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প ফিরছেন কি না।
