পর্নো তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলস বলেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০০৬ সালে তাকে বলেছিলেন ‘ট্রেইলার পার্ক’ থেকে বের হতে চাইলে একমাত্র উপায় হচ্ছে তার (ট্রাম্প) সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করা। এর প্রায় দুই দশক পরে তিনি ট্রাম্পের বিপক্ষে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। ওই মামলায় প্রথমবারের মতো সাবেক কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) নিউইয়র্কের ম্যানহাটানের ডিস্ট্রিক্ট আদালতের বিচারকেরা ৭৭ বছর বয়সী ট্রাম্পকে ব্যবসাসংক্রান্ত নথিতে মিথ্যা ঘোষণা দেওয়ার অভিযোগের এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত করেন। এই মিথ্যা ঘোষণার বিষয়টি হলো, ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ট্রাম্প তার সাবেক আইনজীবী মাইকেল কোহেনের মাধ্যমে স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার দেন এক দশক আগের ওই যৌন সম্পর্কে মুখ না খোলার জন্য। সেই তথ্য ট্রাম্প তার ব্যবসায়িক নথিতে গোপন করেছেন।
আগামী ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জো বাইডেনের প্রতিদ্বন্দ্বী হতে চলেছেন রিপাবলিকান পার্টির নেতা ট্রাম্প। তিনি স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক এবং সেটা চাপা দিতে তাকে ঘুষ দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। ট্রাম্পের দাবি, এসব কিছু রাজ্যনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তার পরবর্তী হোয়াইট হাউসে প্রবেশ ঠেকাতে বাইডেন প্রশাসন এসব কিছু করছে। এখন আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন তিনি।
এই মামলায় সম্প্রতি আদালতে সাক্ষ্য দেন স্টর্মি ড্যানিয়েলস। এতে ট্রাম্পের সঙ্গে তার কীভাবে দেখা হয়েছিল, সেটার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন তিনি। ২০০৬ সালের গ্রীষ্মকালে ক্যালিফোর্নিয়া ও নেভাদা অঙ্গরাজ্যের সীমান্তবর্তী লেক টাহোর একটি হোটেলের পেন্টহাউসে ট্রাম্প ও ড্যানিয়েলসের মধ্যে প্রথম সাক্ষাৎ হয়। তখন সেখানে তারকাদের একটি গলফ টুর্নামেন্ট দেখতে গিয়েছিলেন তারা।
ম্যানহাটানের আদলতে ড্যানিয়েলস বলেন, দেখা হওয়ার পর ট্রাম্প তাকে নিজের হোটেল স্যুটে নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানান। আলাপচারিতার ট্রাম্প তাকে নিজের রিয়েলিটি টেলিভিশন শো ‘দ্য অ্যাপ্রেনটিস’-এ অতিথি হওয়ার কথা বলেন। আলাপের একপর্যায়ে বাথরুমে যান ড্যানিয়েলস। বের হওয়ার পর ট্রাম্পকে বক্সার শর্টস পরে বিছানায় দেখতে পান তিনি।
স্টর্মি ড্যানিয়েলস বলেন, “তিনি (ট্রাম্প) বলেন...আমি মনে করি, তুমি যা চাও, সেই ব্যাপারে তুমি সিরিয়াস। তুমি এই ট্রেইলার পার্ক (বিছানা) থেকে বের হতে চাইলে (তোমার সেটা করা ছাড়া উপায় নেই)।”
ড্যানিয়েলসের ভাষ্য, এরপর তিনি দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েন। কীভাবে তিনি কাপড়হীন অবস্থায় বিছানায় যান, সেসবের কিছুই তিনি স্মরণ করতে পারেন না। তবে তার দাবি, তিনি কোনো ধরনের মাদক নেননি বা মদ পান করেননি। তিনি এটাও জোর দিয়ে বলেন, ট্রাম্পের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক তিনি উপভোগ করেননি। কিন্তু তিনি তাকে থামানোর চেষ্টা করেননি।
স্টর্মি ড্যানিয়েলসের প্রকৃত নাম স্টেফানি ক্লিফোর্ড। আদালতে দেওয়া সাক্ষ্য থেকে জানা যায়, লুইজিয়ানা অঙ্গরাজ্যে মায়ের কাছেই তিনি বড় হয়েছেন। স্বল্প আয়েই মায়ের সংসারে তার শৈশব কেটেছে।