• ঢাকা
  • রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পদ্মার ইলিশ না পেয়ে কলকাতা চেন্নাই দিল্লিতে ‘হাহাকার’


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৪, ০৯:১৬ পিএম
পদ্মার ইলিশ না পেয়ে কলকাতা চেন্নাই দিল্লিতে ‘হাহাকার’
বাংলাদেশ থেকে ভারতে ইলিশ রপ্তানি বন্ধ থাকায় দিল্লির বাজারে দাম আকাশচুম্বী। ছবি: সংগৃহীত

দুর্গাপূজা ঘিরে প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে কয়েক হাজার টন ইলিশ পাঠানো হয় প্রতিবেশী ভারতে। তবে এবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ভারতে পদ্মার সুস্বাদু ইলিশ রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে। এতে ইলিশের সরবরাহ কমে গেছে ভারতের বাজারে। ফলে আসন্ন পূজা উপলক্ষ্যে কলকাতা থেকে শুরু করে রাজধানী দিল্লি পর্যন্ত ইলিশের দাম আকাশ ছুঁয়ে যাচ্ছে।

দিল্লির বাজারে বাংলাদেশি ইলিশের দাম বর্তমানে প্রতি কেজি ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার রুপিতে পৌঁছেছে। ফলে রেঁস্তোরাগুলো আসন্ন দূর্গাপূজায় তাদের খাবারের মেনুর দাম বাড়ানোর কথা ভাবছে। শেষ পর্যন্ত যার ফল ভোগ করতে হবে সাধারণ মানুষকে।

বাংলাদেশ থেকে ইলিশ রপ্তানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করায় ভারতের মাছ বিক্রেতারা অবৈধভাবে ইলিশ আমদানি করতে শুরু করেছেন। আসন্ন পূজায় ইলিশের চাহিদা মেটাতে তারা স্টকে থাকা ইলিশ আকাশচুম্বী দামে বিক্রি করছেন। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।

দিল্লির সিআর পার্ক মার্কেটের এক মাছের আড়তের মালিক জানালেন, তিনি এবং তার মতো আরও অনেকে অবৈধভাবে ইলিশ মাছ কিনে তিন থেকে চার হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। তিনি বলেন, “দুর্গাপূজা আসায় বাঙালি ক্রেতাদের চাহিদা বেড়েছে। তাদের চাহিদা তো আমাদেরই পূরণ করতে হবে।”

চেন্নাইয়ে বাংলাদেশি ইলিশ বিক্রির একমাত্র বিক্রেতা জে কে ফিশ স্টল আদিয়ারের করিম ভাই তার সমস্ত হিমায়িত স্টক বের করেছেন। এগুলো হট কেকের মতো বিক্রি হচ্ছে। তিনি জানান, প্রতি সপ্তাহে একশ কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি ইলিশের দাম এক হাজার ছয়শ থেকে বাড়িয়ে দুই হাজার টাকা করেছেন। তার ভাষ্য, “উৎসব শেষ হলে এক মাস পর দাম কমবে।”

চেন্নাইয়ের ক্লাউড কিচেন ‘আহার’ এর মালিক অত্রি কুমার সিনহা বলেন, “কাঁচা ইলিশের দাম এতটাই বেশি যে বাধ্য হয়ে এক পিস ভাপা ইলিশ (সরিষা ভাপা ইলিশ) পাঁচশ টাকায় বিক্রি করছি। যা আগে আমি সাড়ে তিনশ থেকে চারশ টাকায় বিক্রি করতাম।”

তবে বাংলাদেশ থেকে ইলিশের চালান কলকাতার বাজারকে চাঙা করে তুলতো। যা এবার চোখে পড়ছে না। রপ্তানি নিষিদ্ধ হওয়ায় জোগান কমে গেছে কলকাতার বাজারে। কলকাতার অভিজাত এলাকা বালিগঞ্জের বাসিন্দা অমিতা মুখার্জি বললেন, একটা বড় ইলিশ তিনি সাড়ে তিন হাজার রুপি দিয়ে কিনতে বাধ্য হয়েছেন।

অমিতা মুখার্জি বলেন, “আমার পরিবার খিচুড়ির সঙ্গে ইলিশ ভাজা খেতে চায়। বিশেষ করে বৃষ্টির সময় এটি আমাদের বাঙালি ঐতিহ্যের একটি অংশ। কিন্তু ইলিশের দাম এত বেড়েছে যে পকেটে এর বড় ধরনের চাপ পড়ছে।”

কলকাতার গড়িয়াহাট বাজারের একজন পাইকারি মাছ বিক্রেতা জানালেন, গোপন চ্যানেলের মাধ্যমে অবৈধভাবে ভারতে আসছে ইলিশ। তিনি প্রতি কেজি ইলিশ ২ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন। যেখানে প্রতিটি মাছের ওজন কমপক্ষে দেড় কেজি।

ওই বিক্রেতার মতে, বাংলাদেশের ইলিশের সবচেয়ে বড় আমদানিকারক ছিল ভারত। নিষেধাজ্ঞার আগে কলকাতা ও দিল্লিতে টাটকা ইলিশ এক হাজার দুশ থেকে দেড় হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হতো।  

এদিকে, চেন্নাইয়ের মতো ব্যাঙ্গালোতেও ইলিশের আকাল শুরু হয়েছে। ব্যাঙ্গালোরের ভোজোহরি মান্নার কোরামঙ্গলা শাখার ব্যবস্থাপক শান্তনু হালদার বলেন, “আমরা ভাপা, বরিশালী এবং মেঘনার মতো বিভিন্ন নামে যথাক্রমে জাম্বো, সুপার জাম্বো এবং মিনি তিনটি আকারে একটি করে প্লেট পরিবেশন করি। নিষিদ্ধ হওয়ার পর ইলিশের দাম আকাশচুম্বী থাকায়, বাজারের অবস্থার ওপর ভিত্তি করে দাম বাড়ানো যায় কি না চিন্তাভাবনা করছি।”

Link copied!