• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ট্রেন দুর্ঘটনার দায় নিয়ে গ্রিসের পরিবহনমন্ত্রীর পদত্যাগ


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মার্চ ২, ২০২৩, ১১:০৬ এএম
ট্রেন দুর্ঘটনার দায় নিয়ে গ্রিসের পরিবহনমন্ত্রীর পদত্যাগ

গ্রিসের উত্তরাঞ্চলে দুটি ট্রেনের সংঘর্ষের ঘটনায় দেশটির অবকাঠামো ও পরিবহনমন্ত্রী কস্টাস কারামানলিস পদত্যাগ করেছেন। গত কয়েক দশকের মধ্যে গ্রিসে সবচেয়ে মারাত্মক এই রেল দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৩ জন নিহত হয়েছেন।

এদিকে ‘মর্মান্তিক মানব ত্রুটি’ কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

কস্টাস কারামানলিস পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে এক বিবৃতিতে বলেন, “যখন এত দুঃখজনক কিছু ঘটে, তখন দায়িত্ব পালন করা এবং কিছু ঘটেনি বলে ভান করে থাকা অসম্ভব। গ্রিস রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আমি দায় নিচ্ছি। নিহত মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর অংশ হিসেবে পদত্যাগ করা দায়িত্ব বলে আমি মনে করছি।”

কস্টাস কারামানলিস আরও লিখেছেন, “আমি আবারও ভুক্তভোগীদের পরিবারের প্রতি আমার দুঃখ এবং সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। এটিকে বলা হয় রাজনৈতিক দায়িত্বশীলতা। এই কারণে আমি অবকাঠামো ও পরিবহনমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করছি।”

মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় দুর্ঘটনার সময় যাত্রীবাহী ট্রেনটিতে প্রায় ৩৫০ জন যাত্রী ছিলেন। ট্রেনটি লারিসা শহর ছেড়ে যাওয়ার পরে একটি টানেল থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একটি মালবাহী ট্রেনের সাথে সংঘর্ষ হয়। এতে ৮৫ জন আহত হয়েছেন। যার মধ্যে ছয়জন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) রয়েছেন।

ইতোমধ্যেই দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কায়রাকোস মিতসোতাকিস। এ সময় তিনি বলেন, “এটি একটি মর্মান্তিক মানব ত্রুটি। আমরা ন্যায়বিচারে কাজ করবো। রাষ্ট্র জনগণের পাশে থাকবে। এর জন্য সকলকে জবাবদিহি করা হবে।”

এ ছাড়া মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনার জন্য স্থানীয় স্টেশনমাস্টারের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। দুর্ঘটনার সময় তিনি সিগন্যালের দায়িত্বে ছিলেন। যদিও স্টেশনমাস্টার এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।

গ্রিসের ট্রেড ইউনিয়ন জানিয়েছে, নানান কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তবে দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ রেলের চরম অবস্থার প্রকাশ পেয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে অপর্যাপ্ত কর্মী, ভাঙা সিগন্যাল এবং সেকেলে ব্যবস্থা।

লারিসার গভর্নর কন্সতানতিনোস আগরোসতোস বলেছেন, “সংঘর্ষ অনেক শক্তিশালী ছিল। যাত্রীবাহী ট্রেনটির চারটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম দুটি বগি চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেছে। ট্রেনের ভেতর থেকে প্রায় ২৫০ জনকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।”

অপরদিকে উদ্ধারকারী দলগুলো জীবিত ব্যক্তিদের খোঁজে তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছে।

ট্রেনের পঞ্চম বগি থেকে বাইরে বেরিয়ে আসা জিয়ানিস আন্তোনোগ্লো বলেন, “হঠাৎ জানালা ভেঙে পড়ে এবং আমরা ৪৫ ডিগ্রি কাত হয়ে পড়েছিলাম।”

ধ্বংসাবশেষ থেকে বেঁচে ফেরা ২৮ বছর বয়সী যাত্রী স্টারজিওস মিনেনিস বলেছেন, “দ্রুত আগুন লেগেছিল। যখন আমরা উল্টে যাচ্ছিলাম তখন পুড়ে যাচ্ছিলাম।”

লারিসার মেয়র বলেন, “যারা আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন জেনেটিক পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের পরিচয় শনাক্ত করা হবে।”

লারিসার একটি হাসপাতাল জানিয়েছে, নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনরা ইতোমধ্যে মৃতদেহ শনাক্ত করার জন্য ডিএনএ নমুনা সরবরাহ করেছেন।

আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর

Link copied!