চীনা ই-কমার্স জায়ান্ট আলিবাবার প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা-র ২০ ঘণ্টার রহস্য ঘেরা ঢাকা সফর নিয়ে আলোচনা এখন তুঙ্গে। গত ২৬-২৭ জুন ২০ ঘণ্টার সফরে ঢাকায় আসেন তিনি। ঢাকা থেকে জ্যাক মা চলে যান নেপালে।
সেখানে সংক্ষিপ্ত সফর শেষে তিনি যান পাকিস্তানে। জ্যাক মা-র এই সফরকে অনেকে ব্যবসায়িক সফর মনে করছেন। তাহলে কি বাংলাদেশে বড় বিনিয়োগের ক্ষেত্র খুঁজতে এসেছেন জ্যাক মা? এই প্রশ্ন অনেকের মনে মনে।
জ্যাক মার এই সফরকে ব্যক্তিগত বলা হলেও বাংলাদেশের গণমাধ্যম এবং উদ্যোক্তাদের মাঝে প্রকৃত উদ্দেশ্য নিয়ে অলোচনা তুঙ্গে উঠেছে।
বিশেষ করে তার সফর সঙ্গিদের নিয়ে আলোচনায় ঝড় বইছে বেশি। চীনা, ড্যানিশ ও মার্কিনসহ সাতজন সঙ্গী ছিল তার সফরে। জ্যাক মা উঠেছিলেন গুলশানের রেনেসাঁ হোটেলে।
ওই হোটেলের এক নির্বাহীর তথ্যমতে ২৬ জুন বিকাল ৬টার দিকে তিনি হোটেল থেকে বের হন এবং হোটেলের গাড়িতে করে তিনি দুই ঘণ্টা ঢাকাশহর ঘুরে দেখেন। পরের দিন সকাল ১১টায় সকালের নাস্তা না করেই হোটেল ছাড়েন।
জানা গেছে, ই-কমার্স, রিটেইল, ইন্টারনেট ও প্রযুক্তি খাতে সুবিদিত জ্যাক মা-র মালিকানাধীন আলীবাবা গ্রুপ বাংলাদেশের বৃহত্তম মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা বিকাশেও বিনিয়োগ করেছে।
এছাড়া বৃহত্তম ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম দারাজও অধিগ্রহণ করেছে আলিবাবা। দারাজ বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ার বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার ও নেপালে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিকাশ, দারাজসহ আরও কয়েকটি প্রযুক্তি উদ্যোক্তা নিশ্চিত করেছে যে, জ্যাক মা তাদের সঙ্গে কোনো বৈঠক করেননি।
ওই হোটেলের একজন নির্বাহী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জ্যাক মা-র সঙ্গে তোলা একটি ছবি শেয়ার করার পরই সংবাদমাধ্যম তার সফরের বিষয়টি জানতে পারে। এ নিয়ে দেশের গণমাধ্যম ও উদ্যোক্তাদের মাঝে চলছে ব্যাপক আলোচনা।
বাংলাদেশ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। দেশের পরিবেশও বিদেশিদের জন্য বিনিয়োগবান্ধব। এ কারণে অনেক বিদেশি বিনিয়োগকারী বাংলাদেশের প্রতি আগ্রহী হচ্ছে।
জানা যায়, চীনের ব্যাংক ব্যবস্থা ও সরকারি নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সমালোচনা করার পর ২০২০ সালে অক্টোবর থেকে ২০২১ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত জ্যাক মা অন্তরালে চলে যান। চীন সরকারও তার বিষয়ে কোনো তথ্য সামনে আনেনি।
তিনি কি গৃহবন্দি হয়েছিলেন নাকি স্বেচ্ছায় অন্তরালে ছিলেন, তা নিয়ে এখনও ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা চলছে। তিনি বৈরি পরিস্থিতির শিকার হয়ে নানা দেশ ঘুরে শেষ পর্যন্ত জাপানে থিতু হয়েছেন।
জ্যাক মা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাণিজ্য খতিয়ে দেখতে অনেক সময় সফর করে থাকেন। বাংলাদেশে তার বাণিজ্য বিস্তার করার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
এদিকে জ্যাক মা-র নেপাল ট্যুরকে বিজনেস ট্যুর হিসেবে উল্লেখ করেছেন সে দেশের সংবাদমাধ্যম। তিনি ২৯ জুন পাকিস্তানেও সফর করেন। সেখানেও তিনি গণমাধ্যমকে এড়িয়ে যান।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, জ্যাক মা-র বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপাল সফর ব্যবসায়িক কারণেই। যদি তাই হয়, তাহলে বাংলাদেশের সামনে সুযোগ আসতে পারে তার মতো বিজনেস টাইকুনের কাছ থেকে লাভবান হওয়ার।
প্রসঙ্গত, জ্যাক মা চীনের চতুর্থ শীর্ষ এবং সারা বিশ্বের ৩৯তম শীর্ষ ধনী। তার নিট সম্পদের মূল্য ৩৪ বিলিয়ন ডলার।