কিয়ার স্টারমার, পেশায় ছিলেন একজন আইনজীবী। ৫১ বছর বয়সে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে ব্রিটেনের লেবার পার্টিতে যোগ দেন। এরপর হলবর্ন এবং সেন্ট প্যানক্রাস আসনে মনোনয়ন পান। ২০১৫ সালের সাধারণ নির্বাচনে ১৭ হাজার ৪৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। সম্প্রতি একই আসন থেকে এবারও তিনি বিজয়ী হয়েছেন। তার দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পর শুক্রবার (৫ জুলাই) তিনি যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
শনিবার (৬ জুলাই) পৃথক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সিবিএস নিউজ, ব্রিটানিকা ও বিবিসি।
ব্যারিস্টারি পড়াশোনা করেন কিয়ার স্টারমার। তিনি মানবাধিকারবিষয়ক আইনে বিশেষজ্ঞ ছিলেন। এ শ্রমিক নেতা প্রায়ই নিজেকে ‘শ্রমিক শ্রেণি থেকে উঠে আসা’ বলে বর্ণনা করেন। তার বাবা ছিলেন কারখানাশ্রমিক এবং তার মা নার্স হিসেবে কাজ করতেন। তার মা বিরল স্টিলস ডিজিজের রোগী ছিলেন।
রিগেট গ্রামার স্কুলে পড়াশোনা করেন কিয়ার স্টারমার। এখানে ভর্তি হওয়ার দুই বছর পর এটি বেসরকারি স্কুলে পরিণত হয়। ১৬ বছর বয়স পর্যন্ত তার পড়াশোনার খরচ দিত স্থানীয় সরকার। তিনি এমন একটি পরিবারে বড় হয়েছেন, যেখান থেকে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। লিডস এবং পরে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন নিয়ে পড়াশোনা করেন তিনি।
কিয়ার স্টারমার ১৯৮৭ সালে ব্যারিস্টার হন। মানবাধিকার আইনে বিশেষত্ব অর্জন করেন। মৃত্যুদণ্ড বন্ধ করতে তিনি বিভিন্ন দেশে মানবাধিকার কর্মী হিসেবে কাজ করেন। এজন্য গিয়েছেন ক্যারিবিয়ান এবং আফ্রিকা অঞ্চলেও। ২০০৮ সালে তাকে পাবলিক প্রসিকিউশনের পরিচালক হিসেবে মনোনীত করা হয়। এ পদটি ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের সবচেয়ে সিনিয়র ফৌজদারি প্রসিকিউটর।
২০১৫ সালে এমপি হওয়ার পর প্রাক্তন লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিনের পরামর্শক দলে তার ছায়া ব্রেক্সিট সেক্রেটারি হিসেবে কাজ করেন কিয়ার স্টারমার। ওই সময় তিনি বলেছিলেন, ‘দ্বিতীয় ইইউ গণভোট আয়োজনের বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত।’
২০১৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে লেবার পার্টির পরাজয়ের পর কিয়ার স্টারমার দলের শীর্ষপদের জন্য প্রার্থী হন। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি ২০২০ সালের এপ্রিলে ওই পদে বিজয়ী হন। বিজয়ী ভাষণে তিনি লেবার পার্টিকে ‘আত্মবিশ্বাস এবং আশার সঙ্গে একটি নতুন যুগের নেতৃত্ব’ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) যুক্তরাজ্যের জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবার ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এতে কিয়ার স্টারমারের লেবার পার্টি ৪১২টি আসনে জয় পেয়েছে। বড় ব্যবধান গড়ে তুলেছে কনজারভেটিভ পার্টির সঙ্গে। এই দলটি পেয়েছে ১২১টি আসন।
এবারের নির্বাচনে বিজয়ের পেছনে তার প্রতিশ্রুত স্বাস্থ্যসেবা (প্রতি সপ্তাহে ৪০ হাজার অ্যাপয়নমেন্ট), অভিবাসন (বর্ডার সিকিউরিটি কমান্ড গঠন), আবাসন (১৫ লাখ নতুন বাড়ি তৈরি) ও শিক্ষা (৬ হাজার ৫০০ শিক্ষক নিয়োগ) নীতি প্রভাব বিস্তার করেছে।