উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানে জঙ্গিদের সঙ্গে সংঘর্ষ এবং আত্মঘাতী গাড়ি বোমা হামলায় সেনাবাহিনীর একজন মেজরসহ অন্তত চার সেনা নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী এবং জঙ্গিদের সাবেক শক্ত ঘাঁটি খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের খাইবার এবং উত্তর ওয়াজিরিস্তান জেলায় এ ঘটনা ঘটে।
জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। এতে বলা হয়, পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তের কাছে দুটি আত্মঘাতী বোমা হামলায় চার পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছেন। প্রথম ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ওয়াজিরিস্তান সীমান্ত চেকপোস্টের কাছে। সেখানে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে তিন সেনার মৃত্যু হয়। একই দিন আফগানিস্তান সীমান্তের কাছে জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে আরেকজন পাকিস্তানি সেনা অফিসার নিহত হয়েছেন।
পাকিস্তানি তালেবান এক বিবৃতিতে দাবি করেছে যে টিটিপি যোদ্ধারা প্রতিশোধ নিয়েছে এবং নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ কয়েকজনকে আহত করেছে। সহিংসতাকবলিত পাকিস্তানি জেলাগুলোর নিরপেক্ষ সূত্র থেকে দাবিগুলো নিশ্চিত করা যায়নি।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আত্মঘাতী বোমা বহনকারীর লক্ষ্য ছিল চেকপোস্টে গিয়ে বিস্ফোরণ ঘটানো। কিন্তু সেখানে যাওয়ার আগে তিন সেনাসদস্য তাকে থামান। সেখানেই ওই জঙ্গি বোমাটির বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে তিন সেনাসদস্য মারা যান।
যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক বৈশ্বিক সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত টিটিপি প্রায় দুই বছর আগে আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটো সেনা প্রত্যাহারের পর ইসলামপন্থী তালেবান আফগানিস্তানে ক্ষমতায় ফিরে আসার পর পাকিস্তানে হামলা বাড়িয়েছে।
পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের মতে, পাকিস্তানি তালেবানের নেতা এবং যোদ্ধারা আফগান মাটিতে আশ্রয় নিয়েছে এবং সেখান থেকে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদ চালিয়ে যাচ্ছে।
একটি সমীক্ষার রিপোর্টে বলা হয়েছে, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে পাকিস্তানে ২৭১টি জঙ্গি হামলা হয়েছে। তাতে ৩৮৯ জন মারা গেছেন। এই সময়ে জঙ্গি হামলা ৭৯ শতাংশ বেড়েছে।
পাকিস্তানে টিটিপি এবং অন্যান্য বিদ্রোহী গোষ্ঠীর হামলায় এই বছরের প্রথম ছয় মাসে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যসহ প্রায় ৪০০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। সেনাবাহিনী ২০২৩ সালের শুরু থেকে বোমা হামলা এবং জঙ্গিদের সাথে সংঘর্ষে ১০০ জনের বেশি কর্মকর্তা এবং সেনার মৃত্যুর খবর দিয়েছে।