কলম্বিয়ার অ্যামাজনে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার দুই সপ্তাহের বেশি সময় পর চার শিশুকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া ওই চার শিশুর মধ্যে ১১ মাস বয়সী এক শিশুও রয়েছে। দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে ঘন জঙ্গলের ভেতর থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১৮ মে) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, দেশটির কর্তৃপক্ষ ১৭ দিন আগে বিধ্বস্ত হওয়া ওই বিমানে ভ্রমণকারী চার শিশুর সন্ধানে স্নিফার কুকুরসহ ১০০ জনের বেশি সৈনিক মোতায়েন করেছিল। বিমান দুর্ঘটনায় তিনজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি নিহত হয়েছিলেন।
কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রো বুধবার এক টুইট বার্তায় বলেছেন, সেনাবাহিনীর ‘কঠোর অনুসন্ধান প্রচেষ্টার’ ফলে ওই শিশুদের খুঁজে পাওয়া গেছে। এটি দেশের জন্য একটি আনন্দের দিন।
এর আগে বুধবার, কলম্বিয়ার সশস্ত্র বাহিনী জানিয়েছিল, উদ্ধারকারীরা ‘লাঠি ও ডালপালা দিয়ে তৈরি করা একটি আশ্রয়কেন্দ্র’ দেখতে পেয়ে পরে সেখানে অনুসন্ধান জোরদার করেন। তাদের বিশ্বাস ছিল যে সেখানে বেঁচে থাকা ব্যক্তিরা রয়েছেন।
যদিও কলম্বিয়ার সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে এই শিশুদের খুঁজে পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে কোনো তথ্য জানানো হয়নি। দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোও জানিয়েছে, সামরিক বাহিনী শিশুদের খুঁজে পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।
উদ্ধারকারীরা জানান, চার শিশুর বয়স যথাক্রমে ১৩, ৯, ৪ এবং একজনের বয়স মাত্র ১১ মাস। গত ১ মে দুর্ঘটনার পর থেকে দক্ষিণ ক্যাকুয়েটা প্রদেশের জঙ্গলে ঘুরে বেড়াচ্ছিল তারা।
এদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, কলম্বিয়ার ক্যাকুয়েটা প্রদেশের ঘন জঙ্গলে সামরিক বাহিনীর সদস্য, ফায়ার সার্ভিসের কর্মী এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত দল শিশুদের উদ্ধার করে।
এই উদ্ধার প্রচেষ্টার সমন্বয় করেছে কলম্বিয়ার বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। তাদের প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, দুর্ঘটনার পর এই শিশুরা বিমান থেকে পালিয়ে গিয়েছিল এবং সাহায্যের খোঁজে জঙ্গলের ভেতরে ঘোরাঘুরি শুরু করে।
এ ছাড়া শিশুদের খোঁজ পাওয়ার আগে জঙ্গলে তাদের বেঁচে থাকার জন্য খেয়ে ফেলে দেওয়া ফলের অবশিষ্টাংশ এবং সেই সঙ্গে জঙ্গলের গাছপালা দিয়ে তৈরি করা উন্নত আশ্রয়ও খুঁজে পেয়েছিল উদ্ধারকারীরা।
সেসনা ২০৬ মডেলের বিমানটি গত ১ মে কলম্বিয়ার আমাজোনাস প্রদেশের আরাকুয়ারা থেকে সাতজন আরোহী নিয়ে গুয়াভিয়ার প্রদেশের সান জোসে দেল গুয়াভিয়ার শহরে যাচ্ছিল। মাঝ আকাশে থাকা অবস্থায় বিমানটির ইঞ্জিন ব্যর্থতার মুখে পড়ে এবং বিপদ বুঝতে পেরে বিমানটি থেকে থেকে মে-ডে সতর্কতা জারি করা হয়। দুর্ঘটনার ফলে পাইলটসহ তিনজন প্রাপ্তবয়স্ক নিহত হয়েছিলেন এবং তাদের মৃতদেহ বিমানের ভেতরে পাওয়া যায়। আর ১৩, ৯ ও ৪ বছর বয়সী তিন শিশুর সঙ্গে ১১ মাস বয়সী এক শিশুও এই দুর্ঘটনায় বেঁচে যায়।