জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে অবশেষে পাস হলো গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব। তবে যুক্তরাষ্ট্র ভোটদানে বিরত ছিল।
সোমবার (২৫ মার্চ) ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবিতে একটি প্রস্তাব পাস করেছে নিরাপত্তা পরিষদ। পরিষদের ১৫ সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ১৪ দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়।
ভোটের পর বক্তব্য রাখতে গিয়ে জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাসে বিলম্বের জন্য হামাসকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, “প্রস্তাবের সবকিছুর সঙ্গে একমত না থাকায় আমরা ভোটদানে বিরত ছিলাম। এখানে হামাসের নিন্দা করাসহ কিছু মূল বিষয় উপেক্ষা করা হয়েছে। তবে বন্দীদের মুক্তির ফলে অবরুদ্ধ গাজায় মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি পাবে।”
জাতিসংঘের প্রধান অ্যান্তোনিও গুতেরেস এক্স-এ একটি পোস্টে বলেছেন, “এই প্রস্তাবটি অবশ্যই বাস্তবায়ন করতে হবে।”
গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব পাসের চেষ্টা আগেও কয়েক দফায় হয়েছে। প্রথমদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগের কারণে সেগুলো আটকে যায়। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকেও যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে একটি প্রস্তাব তোলা হয়েছিল। তবে সেই প্রস্তাবে ইসরায়েলের পক্ষে যায় উল্লেখ করে তাতে ভেটো দেয় রাশিয়া ও চীন। এরপর এই প্রথম জাতিসংঘের সর্বোচ্চ পর্ষদ নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতির আহ্বানসংবলিত প্রস্তাব পাস হলো।
কিন্তু ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় বলেছে, যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ভেটো দিতে যুক্তরাষ্ট্র ব্যর্থ হয়েছে। এটি ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান থেকে স্পষ্টভাবে সরে আসা। এটি হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের পাশাপাশি ১৩০ জনেরও বেশি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার প্রচেষ্টাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলের ওপর নজিরবিহীন হামলা চালায়। এ হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হন। ২৫৩ জন ইসরায়েলিকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়। এ হামলার পর গাজায় সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এ হামলায় এখন পর্যন্ত ফিলিস্তিনি নিহতের সংখ্যা ৩২ হাজার ছাড়িয়েছে। সেই সঙ্গে আহত হয়েছেন ৭৪ হাজারের বেশি মানুষ।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলায় বাড়িঘর হারিয়ে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন গাজার ২২ লাখ বাসিন্দার মধ্যে ৮৫ শতাংশ। সেই সঙ্গে সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে উপত্যকার ৬০ শতাংশ স্থাপনা ও ভবন।
সূত্র আল-জাজিরা, বিবিসি, রয়টার্স।