গাজায় ইসরায়েল ও হামাস সেনারা যুদ্ধ করতে করতে এক অপরের খুব কাছে গিয়ে মুখোমুখি যুদ্ধ করছে। উভয় পক্ষই হামলার তিব্রতা বাড়িয়েছে। এজন্য নিজেদের রক্ষা করতে দলে দলে গাজার দক্ষিণ অঞ্চলে পালিয়ে যাচ্ছেন সাধারণ ফিলিস্তিনিরা। বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় রয়টার্স।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জানায়, তাদের সেনারা গাজা শহরের ভেতরে প্রবেশ করেছে। তবে হামাসের দাবি ইসরায়েলি সেনারা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। বুধবার (৮ নভেম্বর) হামাসের অঙ্গ সংগঠন একটি ভিডিও প্রকাশ করে যেখানে দেখা যায় যে, গাজার রাস্তায় ভীষণ যুদ্ধের সঙ্গে ভারী বোমা হামলাও চলছে।
এদিকে হামাস তাদের টানেলগুলোকে ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে সেখান থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর ট্যাংকের ওপর আচমকা হামলা করে প্রতিরোধ গড়ে তুলছে।
হামাসের এক সেনা সদস্য হামাস নিয়ন্ত্রিত টিভি আল-আকসাকে বলেন, “ইসরায়েলি সেনারা গাজার কিছু অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ হয়তো নিয়ে নিতে পারে। তবে এতে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ থেমে যাবে না। ইসরায়েলি সেনারা যত ভিতরে আসবে তাদের পরাজয়ের সম্ভাবনা তত বেড়ে যাবে।”
ইসরায়েল সেনা বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি জানায়, বুধবার (৮ নভেম্বর) ইসরায়েলের প্রকৌশলীরা হামাসের টানেল নেটওয়ার্ক ধ্বংস করতে বিস্ফোরক ব্যবহার করেছে যা কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। এ হামলায় হামাসের ১৩০ টি টানেল ধ্বংস হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনারা।
ফিলিস্তিনের সাধারণ নাগরিকদের মৃত্যুতে হামাসকেই দায়ী করছে ইসরায়েল। তাদের দাবি, হামাস মানববর্ম ব্যবহার করে যুদ্ধ করায় এবং আবাসিক এলাকাগুলোতে অস্ত্র লুকিয়ে রাখায় সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছে। এ হামলায় অনেক বসতবাড়ির দেয়াল গুলিতে ফুটো হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন সাংবাদিকরা।
ইসরায়েলি সেনাদের সহকারী কমান্ডার বলেন, “এসব বিল্ডিংয়ে হামলার সময় কোনো পরিবারকে তারা দেখতে পায়নি। তিনি বলেন, “আমরা জানতাম এখানে সকলে আমাদের শত্রু। তবে আমরা কোনো সাধারণ নাগরিককে এখানে দেখতে পাইনি। এখানে শুধু হামাস বাহিনীই ছিলো।”
তিনি বলেন, “প্রায় ৫০ হাজার ফিলিস্তিনি নাগরিক গাজার দক্ষিণ অঞ্চলে চলে গেছে। তাদের যাওয়ার জন্য ইসরায়েল চার ঘণ্টার সময় বেঁধে দেয়। কারণ হামাস গাজার উত্তর অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছে। তবে শহরের আল-শিফা হাসপাতালসহ উত্তরের আরও অনেক অঞ্চলে মানুষ রয়েছে। তারা বলেন, “এখানকার পরিস্থিতি অনেক ভয়াবহ। এখানে কোনো খাবার নেই, পানি নেই। পানি আনতে গেলে তিন থেকে চার ঘণ্টা লাইনে দাড়িয়ে থাকা লাগে।”
বুধবার গাজার সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির জাবালিয়ার এক হাসপাতালের পাশে করা হামলায় অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন অবরুদ্ধ গাজার পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে ইসরায়েলি সেনারা এ হামলার বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। সূত্র-সিএনএন।