উগান্ডাকে আফ্রিকার কলার রাজধানী বলা হয়। ৫০টিরও বেশি জাতের কলা সে দেশে চাষ করা হয়। নানা রূপে সেই কলা প্রতিদিন খাওয়াও হয়। উগান্ডার মানুষের কাছে কলার গুরুত্ব অনেক বেশি। অন্য কোনো দেশের মানুষ উগান্ডানদের মতো এতো কলা খায় না। এবার এই কলা দিয়েই শিল্পী আইজ্যাক নকোংগে আসবাব তৈরি করেছেন।
শুক্রবার (২ জুন) জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলে এসব তথ্য জানিয়েছে। কলাগাছে মাত্র একবারই ফল ধরে। তাই নতুন ফল গজানোর জন্য সেটি কেটে ফেলা জরুরি। সে কারণে ফসল তোলার পর গাছের বেশিরভাগ অংশ কেটে ফেলা হয়। কিন্তু বর্জ্য হিসেবে ফেলে দেওয়া বদলে আইজ্যাক সেগুলো নতুন করে ব্যবহার করেন।
কলাগাছ দিয়ে তৈরি তার আসবাবের ভিত্তি প্রাকৃতিক তন্তু। আইজ্যাক হাতে করে বাইরের অংশ থেকে তন্তু বার করেন। শীষগুলো চিকন করে কেটে তিনি রোদে শুকিয়ে তারপর প্রক্রিয়াজাত করেন। দক্ষতার সঙ্গে ফাইবার পাকালে দীর্ঘ দড়ি তৈরি করা যায়। পরে কাঠ বা ধাতুর ফ্রেমে সেই দড়ি বোনা হয়।
আইজ্যাক নকোংগে বলছেন, এটা সত্যি অনবদ্য। বেশিরভাগ বাসার ভেতরের অংশ কারখানায় তৈরি কৃত্রিম উপাদান দিয়ে সাজানো। আমি স্থানীয় পর্যায়ে তৈরি কিছু জিনিস চেয়েছিলাম। আমি চাই মানুষ এই আইডিয়া নকল করুক, কারণ এমনটাই হওয়া উচিত। আফ্রিকান হিসেবে আমাদের সেই পথেই এগোনো উচিত।
আইজ্যাক নকোংগে বলেন, “আমাদের এখানে চারিদিকে কলার তন্তু ছড়িয়ে রয়েছে, পেঁপে ও ডাঁটাও পাওয়া যায়। আমাদের স্থানীয় উপাদান ব্যবহারের প্রণালী গ্রহণ করতে হবে। কোনো রাসায়নিক না থাকায় সেগুলো পরিবেশবান্ধবও বটে। কয়েক বছরের মধ্যে রাসায়নিক আমাদের জগত ধ্বংস করে দেবে। কিন্তু আমরা স্থানীয় উপাদান ব্যবহার করলে অবশ্যই আমাদের ভবিষ্যৎ ভালো হবে।”
আইজ্যাক অন্য মানুষকেও এই বিপুল সম্পদ সম্পর্কে শিক্ষা দিতে চান।
তিনি বলেন, “আফ্রিকায় আমরা অঢেল সম্পদে বিশ্বাস করি। যেমন এই ডাল কলার কাঁদিতে ভরা। চাষি কলাগাছ পোঁতার কিছুকাল পর ফসল তুলে কিছু আয় করবেন। অর্থাৎ আমরা সেই অঢেলতা ও ভালো ফসলে বিশ্বাস করি। সে কারণে এখানে একটা পাখি রয়েছে। পাখিও কলা খেয়ে বাঁচছে।”