পূর্ব আটলান্টিক মহাসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় বেরিল ক্যারিবীয় অঞ্চলের দিকে ধেয়ে আসছে। প্রবল শক্তি সঞ্চয় করে ক্যারিবীয় অঞ্চলের দিকে ধেয়ে যাওয়া এই হারিকেনকে ক্যাটাগরি-৪ ঝড়ে পরিণত হতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া বিশ্লেষকরা। একই সঙ্গে এটি ঘণ্টায় ১৭৯ কিলোমিটার বেগে কয়েকটি দেশে আঘাত হানতে পারে।
সোমবার (১ জুলাই) ইউএস ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টারের (এনএইচসি) বরাতে আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় বেরিল বার্বাডোস, সেন্ট লুসিয়া, সেন্ট ভিনসেন্ট, গ্রেনাডাইনস, গ্রেনাডা, মার্টিনিক, টোবাগো ও ডোমিনিকাসহ গোটা ক্যারিবীয় অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে। এরই মধ্যে এসব দেশে ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
বার্বাডোস থেকে প্রায় ৬৭৫ কিলোমিটার পূর্বে আটলান্টিক মহাসাগরে অবস্থান করছে বেরিল। উইন্ডওয়ার্ড দ্বীপপুঞ্জে আঘাত হানার সময় এটি বিপজ্জনক ঝড়ে পরিণত হতে পারে।
এছাড়া বেরিলের আঘাতের সময় ক্যারিবীয় দ্বীপগুলোতে জোয়ারের স্তর স্বাভাবিকের তুলনায় ৬ থেকে ১০ ফুট বৃদ্ধি পেতে পারে। ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ বার্বাডোস, ডোমিনিকা, গ্রেনাডা এবং মার্টিনিকের কাছাকাছি এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে প্রবল এই ঝড়টি আরও শক্তিশালী হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
অ্যাকুওয়েদার-এর প্রধান হারিকেন পূর্বাভাসকারী অ্যালেক্স ডাসিলভা সতর্ক করে বলেছেন, অ্যাটান্টিকের এই অংশে মৌসুমের শুরুতে এই ধরনের দ্রুত গতিতে ঝড়ের তীব্রতা দেখতে পাওয়া অনেকটা বিরল। লোয়ার অ্যান্টিলিস জুড়ে বেশ কয়েকটি দ্বীপ জীবন ও সম্পত্তির চরম ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছে।
এদিকে ক্যারিবিয়ান অঞ্চলজুড়ে বহু মানুষ তাদের বাড়িঘরের সুরক্ষার জন্য কাঠের বোর্ড দিয়ে দরজা বা জানালা ঢেকে দিচ্ছেন, অনেকে ফিলিং স্টেশনে জ্বালানির জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছেন এবং আবার অনেকে ঝড় ও দুর্যোগের প্রস্তুতি হিসেবে খাবারসহ অন্যান্য পণ্য সরবরাহ এবং পানি মজুদ করছেন।
এমন অবস্থায় বাসিন্দাদের জরুরি প্রস্তুতি নিতে সতর্ক করেছে ক্যারিবিয়ান দেশগুলো। বেরিলের তাণ্ডবের শঙ্কায় ওই অঞ্চলের মানুষ জ্বালানির জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছেন। একইসঙ্গে দুর্যোগের প্রস্তুতি হিসেবে খাবার ও পানি মজুদের হিড়িক পড়েছে।
ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে হারিকেন মৌসুম ১ জুন থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। যার শুরুতে আটলান্টিক মহাসাগর অঞ্চলে এটি দ্বিতীয় শক্তিশালী ঝড় হতে যাচ্ছে। এর আগে প্রথম গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড় আলবার্টোর আঘাতে ৪ জনের মৃত্যু হয়।
ভয়াবহ ঝড় আঘাত হানার আশঙ্কায় বার্বাডোজের রাজধানী ব্রিজটাউনের গ্যাস স্টেশনগুলোয় সারিবদ্ধভাবে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। এছাড়া সুপার মার্কেট এবং মুদি দোকানে খাবার, পানি ও অন্যান্য সামগ্রী কেনার জন্য মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।