দীর্ঘ ১৬ বছর পর পেরুর সাবেক প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফুজিমোরি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। বুধবার (৬ ডিসেম্বর) শারীরিক অবস্থার বিবেচনা করে ৮৫ বছর বয়সী ফুজিমোরিকে মুক্তি দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আদালতে ক্ষমা পাওয়ার পর বুধবার আলবার্তো ফুজিমোরিকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। ১৯৯০ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত তিনি পেরুর প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। তার এক দশকের শাসনামলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ২৫ বছরের সাজা ভোগ করছিলেন।
আন্তঃআমেরিকান মানবাধিকার আদালত ও ভুক্তভোগীদের পরিবারের সমালোচনা সত্ত্বেও, দেশটির সর্বোচ্চ আদালত মঙ্গলবার মানবিক কারণে ৮৫ বছর বয়সী ফুজিমোরিকে ক্ষমা ঘোষণার একটি আপিলের পক্ষে রায় দিয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
২০০৭ সালে চিলি থেকে প্রত্যর্পণ করার পর গত প্রায় ১৬ বছর ধরে কারাগারেই ছিলেন ফুজিমোরি।
পেরুর রাষ্ট্র-চালিত ন্যাশনাল পেনটেনশিয়ারি ইনস্টিটিউট ফুজিমোরিকে ‘অবিলম্বে মুক্তির’ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পরপরই বুধবার তাকে কারাগার থেকে বের হয়ে একটি গাড়িতে উঠতে দেখা যায়। তার মুক্তির এই ঘটনাটি স্থানীয় টিভিতে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়।
পরে সাবেক এই প্রেসিডেন্টের মুক্তির সময় তার বিপুল সংখ্যক সমর্থক ও সাংবাদিকদের ফুজিমোরিকে বহনকারী গাড়ির পেছনে পেছনে যেতে দেখা যায়। কারাগারের বাইরে অপেক্ষারত ফুজিমোরির এক সমর্থক বলেন, “ফুজিমোরির বিরুদ্ধে এই অবিচারের অবসানের সময় এসেছে।”
ফুজিমোরি সন্ত্রাসবাদ এবং অর্থনৈতিক পতন থেকে পেরুকে রক্ষা করেছিলেন বলে বিশ্বাস তার সমর্থকদের। তবে সমালোচকদের দাবি, শাইনিং পাথ গেরিলাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সময় তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে নৃশংসতা চালিয়েছেন।
রয়টার্স জানায়, ১৯৯১ ও ১৯৯২ সালে শাইনিং পাথ গেরিলাদের সঙ্গে যুদ্ধের সময় ২৫ জনকে হত্যার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগে ২০০৯ সালে ফুজিমোরিকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। সেসময় তাকে ২৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে ২০১৭ সালে পেরুর তৎকালীন প্রেসিডেন্ট পেড্রো পাবলো কুজিনস্কি তাকে ক্ষমা করেন।
তবে দেশটির নিম্ন আদালত বারবার তার ক্ষমার প্রার্থনা স্থগিত করে দেয়। কিন্তু এবার দেশটির সর্বোচ্চ আদালত মানবিক কারণে ক্ষমার আদেশ পুনর্বহালের রায় দেওয়ায় মুক্তি পান আলবার্তো ফুজিমোরি।