ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের রাজধানী মুম্বাইয়ে ধূলিঝড়ে বিলবোর্ড উপড়ে ১২ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৬০ জন।
সোমবার (১৩ মে) বিকেল সাড়ে ৪টা নাগাদ হঠাৎই আকাশ কালো করে জোরালো ঝড় ওঠে মুম্বাইয়ে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই শুরু হয় ধূলিঝড়। সেই ঝড়ের ধাক্কায় ঘাটকোপড় এলাকায় উপড়ে যায় একটি বিশাল আকারের ধাতব বিজ্ঞাপন বোর্ড। ভেঙে পড়া সেই বিলবোর্ডের নিচে চাপা পড়েন অনেকেই।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই বিলবোর্ডের নীচে চাপা পড়েছিলেন অনেকেই। ৬৭ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহতদের মধ্যে আটজনের দেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। বাকি ৪ জনের দেহ যৌক্তিক কারণেই উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ভারতের জাতীয় দুযোর্গ মোকাবিলা বাহিনী ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সের (এনডিআরএফ) পরিদর্শক গৌরব চৌহান।
ঘটনাস্থলের যেসব ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে—সেগুলোতে দেখা গেছে যে বিজ্ঞাপনী বিলবোর্ডটি ভেঙে পড়ছে একটি পেট্রোল পাম্পের ওপর; যার আঘাতে দুমড়ে গিয়ে নীচে নেমে আসে পেট্রোলপাম্পের ছাদ। চাপা পড়ে পেট্রোল পাম্পে দাঁড়িয়ে থাকা কিছু গাড়িও। বিলবোর্ডের ধাতব কাঠামো বহু গাড়ির ছাদ ফুঁড়ে ঢুকে যায়। আয়তনের হিসাব করে পুলিশ তখনই জানিয়েছিল, বিলবোর্ডের নীচে অনেকে চাপা পড়ে থাকতে পারে।
এনডিআরএফের কর্মীদের প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় অনেকাংশে সরানো সম্ভব হয় ধ্বংসস্তূপ। উদ্ধার ৮ জন মৃতব্যক্তির মধ্যে ঘটনাস্থলেই মৃত পাওয়া গেছে ৩ জনকে। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয়েছে আরও ৫ জনের।
গৌরব চৌহান বলেন, “আমরা এখনও চারজনের মরদেহ উদ্ধার করতে পারি নি। কারণ সেগুলোর অবস্থান পেট্রোল পাম্পের কাছে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করলে সেখানে আগুন বা এ জাতীয় দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা প্রবল।”
জীবিত অবস্থায় যে ৬৭ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে, তাদের সবাই কম-বেশি আহত হয়েছেন। অনেককেই ভর্তি করাতে হয়েছে হাসপাতালে।
আকস্মিক এ দুর্ঘটনায় মৃতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ৫ লাখ রুপি করে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিণ্ডে। উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ জানিয়েছেন, মহরাষ্ট্রের রাজ্য সরকার বিশদ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
সোমবার বিকেলে এই ঝড় ওঠার কিছু ক্ষণ আগেই মহারাষ্ট্রের আবহাওয়া দপ্তর সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছিল। আবহাওয়ায় বড় ধরনের কোনও পরিবর্তন হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছিল মুম্বই, পালঘর এবং থানের বাসিন্দাদের। তার পরেই কয়েক মিনিটের ওই ঝড়ে আরব সাগরের তীরের ঝকঝকে শহর তছনছ হয়ে যায়। ধুলোয় গোটা শহরটাই ধূসর রঙ নেয়। একটা সময়ে দৃশ্যমানতা গিয়ে পৌঁছায় প্রায় শূন্যতে।
ফলে থমকে যায় শহরের সমস্ত যান চলাচল। ঝড়ে মুম্বই শহরের বহু গাছ, বিদ্যুতের খুঁটিও উপড়ে যায়। থমকে যায় রেল এবং মেট্রো পরিষেবাও। এর মধ্যেই ঝড়ের প্রাবল্যে ঘাটকোপড়ের ওই বিলবোর্ডটিও ভেঙে পড়ে।
সূত্র : এনডিটিভি/ আনন্দবাজার