রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর কাছে একটি ড্রোন বিধ্বস্ত হয়েছে। মূলত বেসামরিক স্থাপনায় হামলার চেষ্টা করা হয়েছিল বলে দাবি করেছে আঞ্চলিক গভর্নর। এ ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে ক্রেমলিন। নিজ প্রশাসনকে সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানী মস্কোর ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্বে একটি সামরিক ড্রোন বিধ্বস্ত হয়েছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, দক্ষিণের দিকে ইউক্রেনের আরও দুটি ড্রোন গুলি করে নামানো হয়েছে। ইতোমধ্যে ইউক্রেনকে দায়ী করছে রাশিয়া। এর আগেও একাধিকবার ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটেছে রাশিয়ার অভ্যন্তরে। প্রত্যেকবারই জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছে কিয়েভ।
ড্রোনটি যে স্থানে বিধ্বস্ত হয়েছিল তার খুব কাছেই রাশিয়ান শক্তি জায়ান্ট গ্যাজপ্রম গুবাস্তোভো গ্রামের কাছে একটি প্রকল্প পরিচালনা করছে। প্রকল্পের আশপাশের এলাকাটি ব্যাপকভাবে বনভূমিতে ঘেরা।
প্রতিষ্ঠানটি রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আরআইএকে জানিয়েছে, এর ফলে তাদের কার্যক্রমে কোনো ব্যাঘাত ঘটেনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে একটি পোস্টে মস্কোর আঞ্চলিক গভর্নর আন্দ্রেই ভোরোবিভ বলেন, “কোলোমনা জেলায় একটি ড্রোন বিধ্বস্ত হয়েছে। সম্ভবত বেসামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করে হামলা চালানোর উদ্দেশ্য ছিল। রাশিয়ান নিরাপত্তা পরিষেবা ও অন্যান্য কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে এ ঘটনায় কোনো হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।”
রাশিয়ার গণমাধ্যম ও কর্মকর্তাদের শেয়ার করা ছবিগুলোতে দেখা যায়, তুষার ঢাকা বার্চ গাছের বনের মধ্যে একটি ক্ষতিগ্রস্ত ড্রোন। ড্রোনটি ‘ইউযে-২২ এয়ারবর্ন’ মডেলের। যা ইউক্রেনীয় নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ‘ইউকেআরজেট’ এর তৈরি।
ইউক্রেনের অভ্যন্তরীণবিষয়ক মন্ত্রীর উপদেষ্টা আন্তন জেরাশচেঙ্কো ড্রোনটির একটি ছবি টুইট করে লিখেছেন, “রাশিয়ার সীমান্ত থেকে এটি ৫০০ কিলোমিটারেরও বেশি দূরে। পুতিন জনসমক্ষে আসতে ভয় পেতে পারেন কারণ ড্রোন অনেক দূর পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।”
যদি এই ড্রোন হামলার সঙ্গে ইউক্রেন জড়িত থাকে তবে এটি হবে মস্কোতে ড্রোন হামলার সবচেয়ে কাছের প্রচেষ্টা।
এদিকে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক সেন্ট পিটার্সবার্গের আকাশসীমানা বন্ধ করে দেওয়া হয়। একাধিক রুশ টেলিভিশন ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সতর্কবার্তাও প্রচার করে। যদিও ওই ঘটনার জন্য হ্যাকিংকে দায়ী করেছেন কর্মকর্তারা।
মঙ্গলবার রাশিয়ার কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পরিষেবাকে ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, “ইউক্রেন ও পশ্চিমারা গুপ্তচরবৃত্তি এবং নাশকতা বাড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। এর বিরুদ্ধে জোড়ালো ব্যবস্থা নিতে হবে।”
এছাড়াও পূর্ব ইউক্রেনে রাশিয়ার দখলকৃত অঞ্চলে নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে এফএসবিকে নির্দেশ দিয়ে পুতিন বলেন, “অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদের প্রবেশ বন্ধ এবং নাশতাকতা বন্ধ করতে হবে।”