ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনে ইরাকের দূতাবাসের সামনে ‘ডেনিশ প্যাট্রিয়টস’ নামে একটি গোষ্ঠী কর্তৃক ইসলামের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন পোড়ানোর ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে ইরাকসহ অন্যান্য মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলো।
মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। এ ঘটনায় বাগদাদে অবস্থিত ডেনমার্কের দূতাবাসের ডেনিশ স্টাফ দেশ ছেড়েছেন বলেও জানিয়েছে ইরাক। যদিও ডেনমার্ক বলছে, তারা ইরাক থেকে দূত প্রত্যাহার করেনি।
ওই ঘটনার পর বাগদাদে প্রায় এক হাজার বিক্ষোভকারী ডেনিশ দূতাবাসের দিকে যাওয়া চেষ্টা করে। এ সময় নিরাপত্তা বাহিনী ডেনিশ দূতাবাসে পৌঁছাতে বিপুল জনতাকে বাধা দিতে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে। এ ছাড়া শহরের সুরক্ষিত গ্রিন জোন যেখানে অনেক বিদেশি দূতাবাসের আবাসস্থল রয়েছে, সেদিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য যে সেতুগুলো ব্যবহার করা হয় সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত সপ্তাহে সুইডেনের স্টকহোমে পরিকল্পিতভাবে কোরআন পোড়ানোর পর উত্তেজিত জনতা বাগদাদে সুইডেনের দূতাবাসে আগুন ধরিয়ে দেয়।
ইরাকের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এই ধরনের কাজগুলো চরমপন্থা এবং ঘৃণাকে ছড়িয়ে দেয়। সমাজের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের জন্য একটি সত্যিকারের হুমকি। মুসলমানরা পবিত্র কোরআনকে ঈশ্বরের বাণী বলে মনে করে এবং এর প্রতি ইচ্ছাকৃত ক্ষতি বা অসম্মান প্রদর্শনকে গভীরভাবে আপত্তিকর।
তারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলোর কর্তৃপক্ষকে তথাকথিত বাকস্বাধীনতা এবং বিক্ষোভের অধিকারের সুরক্ষার বিষয়টি অবিলম্বে আরও একবার ভেবে দেখার আহ্বান জানিয়েছে।
তুরস্ক ঘটনাটিকে কোরআনের ওপর একটি ঘৃণ্য আক্রমণ বলে অভিহিত করেছে। আলজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘটনার নিন্দা জানাতে ডেনিশ রাষ্ট্রদূত এবং সুইডিশ চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্সকে তলব করেছে।
ইরানও দেশটির এমন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করেছে। কাতারের স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, দেশটির বৃহত্তম বাজার সৌক আল বালাদি কোরআন পোড়ানোর প্রতিবাদে সুইডিশ পণ্যগুলো সরিয়ে দিয়েছে।
এদিকে এক টুইট বার্তায় ডেনমার্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ডেনমার্ক আজকের দিনে কয়েকজন লোকের দ্বারা কোরআন পোড়ানোর নিন্দা জানায়। এই উসকানিমূলক এবং লজ্জাজনক কাজগুলো ডেনিশ সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিনিধিত্ব করে না। সবার কাছে উত্তেজনা কমানোর আবেদন। সহিংসতা কখনোই প্রতিক্রিয়া হতে পারে না।