• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চিন্ময়-ইসকন নিয়ে ঢাকাকে নতুন বার্তা দিল দিল্লি


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৯, ২০২৪, ০৭:৩৩ পিএম
চিন্ময়-ইসকন নিয়ে ঢাকাকে নতুন বার্তা দিল দিল্লি
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী এবং আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) নিয়ে নতুন এক বার্তা দিয়েছে ভারতের রাজধানী দিল্লি।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এ বার্তা দেন। এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আনন্দবাজার পত্রিকা।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার করা নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই ভারতে চলছে মাতামাতি। সেই সঙ্গে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন বেড়ে গেছে বলে ঢালাওভাবে প্রচার করা হচ্ছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে। ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে এ নিয়ে বিক্ষোভও হয়েছে। এসব ঘটনা নিয়েই গণমাধ্যমকর্মীদের করা প্রশ্নের উত্তর দেন রণধীর জয়সওয়াল।

চিন্ময় দাসকে নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, “আমরা চিন্ময় দাসের গ্রেপ্তার নিয়ে বিবৃতি দিয়েছি। আমরা দেখেছি সেখানে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। আমরা আশা করি তার বিরুদ্ধে যে আইনি প্রক্রিয়া চলছে, সেটি স্বচ্ছ ও ন্যায় বিচারের ভিত্তিতে হবে। তার যে আইনি অধিকার রয়েছে সেটি পুরোপুরিভাবে তিনি পাবেন।”

বাংলাদেশ সরকার ইসকনকে ‘উগ্রবাদী সংগঠন’ আখ্যা দিয়েছে উল্লেখ করে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন রণধীর জয়সওয়ালকে। প্রশ্নের জবাবে রণধীর বলেন, “ইসকন বৈশ্বিকভাবে প্রখ্যাত সংগঠন হিসেবে স্বীকৃত। তাদের সামাজিক ক্ষেত্রে অবদান রাখার ভালো রেকর্ড রয়েছে। আমরা বাংলাদেশ সরকারকে আবারও বলব সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন।”

ভারত থেকে বাংলাদেশে পণ্য সরবরাহ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, “ভারত থেকে বাংলাদেশে পণ্য সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে। একইভাবে, বাংলাদেশ ও ভারতের মাঝে উভয় দিকেই বাণিজ্য অব্যাহত রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য বন্ধ হবে না।”

গত ৫ অগস্ট গণঅভ্যুত্থানের জেরে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে ভারতে চলে গেছেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের নতুন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে নয়াদিল্লির সম্পর্ক নিয়ে নানা সন্দেহ তৈরি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিংহ সংসদে দেওয়া বিবৃতিতে বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, “বিগত কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশের বিভিন্ন হিন্দু মন্দির এবং বিগ্রহের ওপর হামলা এবং ভাঙচুরের রিপোর্ট আসছে। ভারত সরকার এই ধরনের ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে।

এর আগে ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ওপর গেরুয়া পতাকা উত্তোলনের অভিযোগে হিন্দু নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা হয়। সেই মামলায় ২৫ নভেম্বর ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যাওয়ার সময় শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে ডিবি সদস্যরা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করেন।

পরের দিন ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের একটি আদালতে চিন্ময়ের বিরুদ্ধে করা মামলার শুনানি ঘিরে আদালত চত্বরে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়। এ সময় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবিতে আন্দোলনকারীদের হামলায় সাইফুল ইসলাম আলিফ নামে এক আইনজীবী নিহত হন।

ইসকনের বাংলাদেশ শাখা চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যার সাথে হিন্দুত্ববাদী এই ধর্মীয় সংগঠনের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তবে ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস- ইসকনের বাংলাদেশ শাখা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের কোনো কিছুর দায় নেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে।

Link copied!