• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কেরালায় ভূমিধসে নিহত বেড়ে ১৪৩


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ৩১, ২০২৪, ১১:০৫ এএম
কেরালায় ভূমিধসে নিহত বেড়ে ১৪৩

ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালায় ভয়াবহ ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৪৩ জনে পৌঁছেছে। কয়েক ঘণ্টার টানা ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে সৃষ্ট এই ভূমিধসে আহত হয়েছেন আরও প্রায় দুইশ মানুষ।

আরও শতাধিক মানুষ এখনও আটকা পড়ে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। উদ্ধার অভিযান এখনও চলছে। এই অবস্থায় ভারতের এই রাজ্যে আরও অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া রাজ্যটির বেশ কিছু জেলার রেড অ্যালার্টও জারি করা হয়েছে। 

বুধবার (৩১ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, মঙ্গলবার প্রবল বৃষ্টির মধ্যে কেরালার ওয়ানাদ জেলায় ধারাবাহিক ভূমিধসের ফলে কমপক্ষে ১৪৩ জন মারা গেছেন এবং আরও প্রায় ১৮৬ জন আহত হয়েছেন। সরকারি সংস্থাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধার অভিযান চালালেও এখনও শতাধিক লোক আটকে থাকতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বেশ কয়েকটি পরিবার জানিয়েছে, তাদের প্রিয়জনের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। ভারতীয় সেনাবাহিনী ওয়েনাদে অনুসন্ধান ও উদ্ধার প্রচেষ্টার জন্য প্রায় ৩০০ জন সেনা সদস্য মোতায়েন করেছে। এ ছাড়া প্রয়োজন দেখা দিলে উদ্ধারকাজে নামানোর জন্য আরও ১৪০ জনকে তিরুবনন্তপুরমে স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (এনডিআরএফ) এবং সেনাবাহিনীকে সহায়তা করার জন্য নৌবাহিনীর দল ও হেলিকপ্টারগুলোকে ঘটনাস্থলে আনা হয়েছিল। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দুর্যোগ ত্রাণ দলও ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে এবং উদ্ধারকারী কুকুর দলগুলোকেও এয়ারলিফট করে সেখানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

কেরালা অঞ্চলটি অবিরাম বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া বৃষ্টির জেরে সেখানকার অবরুদ্ধ রাস্তাগুলো এই দুর্যোগের মধ্যে ত্রাণ প্রচেষ্টাকে আরও জটিল করে তুলেছে। রাজ্যটি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৩৭২ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে। আর এরপরই চার ঘণ্টার মধ্যে ওয়ায়ানাদ জেলায় তিনটি ভূমিধসের ঘটনা ঘটে।

আবহাওয়া দপ্তর আগামী কয়েক দিনের জন্য ওয়ানাদ এবং অন্যান্য কয়েকটি জেলায় আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে। এই সতর্কতা জারি করা হয়েছে ইদুক্কি, ত্রিশুর, পালাক্কাদ, মালাপ্পুরম, কোঝিকোড়, ওয়েনাদ, কান্নুর এবং কাসারগোড জেলার জন্য। এই জেলাগুলোতে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।

এ ছাড়া চারটি জেলা অরেঞ্জ অ্যালার্টের অধীনে রয়েছে। এসব জেলা হচ্ছে- পাঠানামথিট্টা, আলাপ্পুঝা, কোট্টায়ম এবং এরনাকুলাম।

ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের সাথে কথা বলেছেন এবং এলডিএফ সরকারকে সব ধরনের সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বিজেপি প্রধান জেপি নাড্ডাকে দলীয় কর্মীদের উদ্ধার কাজে সহায়তা নিশ্চিত করতেও বলেছেন।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এই দুর্যোগে নিহতদের পরিবারকে ২ লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা করা করেছে। আহতদের ৫০ হাজার রুপি করে দেওয়া হবে।

মঙ্গলবারের ভয়াবহ এই ভূমিধসে বেশ কিছু ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে, জলাশয় ফুলে-ফেঁপে উঠেছে এবং বহু গাছ উপড়ে গেছে। মুন্ডক্কাই, চুরামালা, আত্তামালা এবং নূলপুঝার মনোরম গ্রামগুলোও অন্যান্য এলাকা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সেখানে অনেকে আটকে আছেন বলে জানা গেছে।

এমন অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন সন্ধ্যায় একটি উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন। সেখানে তিনি উদ্ধার অভিযানের পর্যালোচনা এবং ত্রাণ শিবিরে স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাও পর্যালোচনা করেন।

জরুরি সহায়তার প্রয়োজনে রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর একটি কন্ট্রোল রুমও খুলেছে। যাদের জরুরি সহায়তার প্রয়োজন তারা কর্তৃপক্ষের সাথে হেল্পলাইনের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন।

আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর

Link copied!