কিম জং উনের চেহারায় সবসময় লেগে থাকে শিশুসুলভ সারল্য। গোলগাল চেহারার এ মানুষটিকে চিনে না, এমন মানুষ বিশ্বে খুব কমই আছে। তাকে চিনে দেশের শাসন ব্যবস্থা এবং দুঃসাহসী ও ভয়ানক সব কর্মকাণ্ডের জন্য। এই মানুষটার ভয়ে কাবু হয়ে থাকেন উত্তর কোরিয়ার সব মানুষ। কেউ তার ক্ষোভের নজরে পড়লে টিকে থাকা মুশকিল। জেলে যেতে হবে যে কোনো মুহূর্তে।
তার সমালোচকেরা বলে থাকেন, হিটলার, মুসোলিনের মতো এই ভয়টাই তার দেশ শাসনের মূল মন্ত্র। অথচ সেই শাসকের চোখে পানি।
প্রকাশ্য এক জনসভায় কাঁদছেন কিম। কান্না লুকাতে মুখে হাত বুলানোর ভান করলেও কাজ হয়নি। এক পর্যায়ে আবেগ আরও বেড়ে গেলে, তিনি রুমাল দিয়ে চোখের পানি মুছে নেন।
কিম জং উনের সেই কান্নার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সারা বিশ্বে। কেন কাঁদলেন কিম? এর উত্তরে জানা গেছে ভিন্ন আর ব্যতিক্রমী এক আয়োজনের খবর।
কোরিয়ান সেন্ট্রাল টেলিভিশন জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ায় জনসংখ্যা অনাকাঙ্ক্ষিত হারে হ্রাস পাচ্ছে। তাই জনসংখ্যা বৃদ্ধির উদ্যোগ হিসেবে সে দেশের সকল মায়েদের নিয়ে তিনি এক সমাবেশের আয়োজন করেন।
সমাবেশে বক্তৃতা করতে গিয়ে মায়েদের উদ্দেশ্যে কিম বলেন, “একমাত্র আপনারাই পারেন আমাদের জনসংখ্যা বৃদ্ধির কাজটিতে গুরুত্বপূর্ণ সহযোগিতা করতে। আমি আপনাদের প্রতি আর্জি জানাচ্ছি যে আপনারা বেশি বেশি সন্তান জন্ম দিন। শুধু তাই নয়, যে কোনো জাতীয় সমস্যা সমাধানে মায়েরাই গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতে পারে। আমি আপনাদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। এবং এটাও বলতে চাই যে, আমি যদি কোনো সমস্যায় পড়ি, তখন আমারও প্রথমে মায়ের কথাই মনে পড়ে।”
ওই সভায় উপস্থিত হাজার হাজার মায়েদের সামনে যখন কিম জং উন এমন আবেগঘন কথা বলছিলেন, তখনি তার চোখ বেয়ে পানি পড়তে দেখা যায়। সেই দৃশ্য সামলাতে এক পর্যায়ে মাথা নিচু করে রুমাল দিয়ে বার বার চোখ মুছে নেন কিম।
জানা যায়, গত এক বছরে উত্তর কোরিয়ায় জন্মের হার ১.৮ শতাংশে এসে ঠেকেছে। দেশটিতে এখন মোট জনসংখ্যা দুই কোটি ৫০ লক্ষ। সূত্র-আনন্দবাজার পত্রিকার অনলাইন।