গরুর দুধের চেয়ে চারগুণ বেশি দামের বিক্রি হয় গরুর মূত্র। হ্যা, আপনি ঠিকই পড়েছেন। কারও কাছে এই মূত্র অপবিত্র হলেও ভারতের রাজস্থানের বাসিন্দাদের কাছে এটি যেন সোনার মতো দামি। এমনকি গরুর মূত্রকে সর্ব রোগের মহৌষধ বলেও দাবি তাদের।
গরুর মূত্রের এত চাহিদা যে, কখনো কখনো উদ্যোক্তা রাতভর জেগে থাকেন কখন গরু মূত্র বিসর্জন দেবে। কেননা সময়মতো দুধ সংগ্রহ করা গেলেও মূত্রের জন্য থাকতে হয় কড়া সতর্কতায়। এখানে এক লিটার দুধের দাম সর্বোচ্চ ৩৫ থেকে ৪৮ টাকা হলেও এক লিটার গোমূত্র বিক্রি হয় ১৭৫ থেকে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত।
খামারিরা জানান, মূত্র সংগ্রহ করা দুধ দোহানোর চেয়েও কঠিন। রাত জেগে অপেক্ষা করতে হয় এবং সঠিক সময়মতো সংগ্রহ না করলে এটি অপচয় হয়ে যায়। তবে রাতজাগার এই কষ্ট তারা মেনে নিতে প্রস্তুত। কারণ এর লাভ দুধের চেয়ে অনেক বেশি। থারপার্কার জাতের গরুর মূত্রের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। এর পেছনে কারণও রয়েছে।
কৃষি বিজ্ঞানীরা বলছেন, গো-মূত্রে এমন কিছু রাসায়নিক উপাদান রয়েছে, যা জৈব চাষে অত্যন্ত কার্যকর। এতে ইউরিয়া, হরমোন এবং এনজাইমসহ মোট ১৫ রকমের উপকারী উপাদান রয়েছে। গোমূত্রের সঙ্গে গোবর ও গুড় মিশিয়ে তৈরি করা জৈব সার চাষিদের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ।
রাজস্থানের মহারাণা প্রতাপ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানান, তাদের গবেষণায় গোমূত্রের ঔষধি গুণ প্রমাণিত হয়েছে। এটি শুধু জৈবসার হিসেবে নয়, হিন্দুধর্মে পূজা অর্চনার জন্য ব্যবহৃত হয়। পঞ্চগব্য নামে এক বিশেষ উপাদান তৈরিতে গোমূত্রের গুরুত্ব অপরিসীম।
সম্প্রতি ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক ভুয়া খবর নিয়ে সতর্কতা জারি করেছে। বলা হয়েছিল, গোমূত্র বিক্রির জন্য সরকার অনুমোদিত লাইসেন্স দিচ্ছে। কিন্তু এটি ভুয়া প্রমাণিত হয়। এ নিয়ে আরও গবেষণা ও সচেতনতা তৈরি করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা৷